৮৮৪৮.৬৬ মিটার উঁচুতে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় সোমবার সকালে পা রেখেছিলেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মার ব্য়ক্তিগত দেহরক্ষী লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল। ঠিক সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পৌঁছন তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অভিজ্ঞ পর্বতারোহী তেনজিং শেরপা। এভারেস্ট অভিযানে রওনা দিয়েছিলেন এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে। তাঁর এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গোটা কলকাতা পুলিশ। লক্ষ্মীকান্তবাবুর এভারেস্ট জয়ের খবর আসার পর পুলিশ কমিশনার সহ শীর্ষ আধিকারিকেরা তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পোস্টও করেন।
এরপর শুক্রবার অর্থাৎ ২৩ মে বিকেল ৩টে নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছন লক্ষ্মীকান্ত। সেখানে তাঁকে সংবর্ধনা জানাতে হাজির ছিলেন পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা সহ কলকাতা পুলিশের আধিকারিকেরা। ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় তাঁকে। অন্যদিকে, তমলুকে পুলিশ কর্তারাও পৌঁছন তাঁর বাড়িতে, মিষ্টিমুখ ও শুভেচ্ছা নিয়ে।
পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক মহকুমার মাথুরি গ্রামে ছোটবেলা কেটেছে লক্ষ্মীকান্তর। ২০১২ সালে পুলিশে যোগ দেন। ভূগোলে স্নাতকোত্তর পাশ করার পর হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে বেসিক এবং অ্যাডভান্সড মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স করেন। পেয়েছেন সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ ট্রেনিং-ও। এভারেস্ট জয়ের খবরটি পৌঁছতেই আনন্দে ভরে ওঠে মাথুরি। কলকাতা পুলিশ ফোন করে খবরে জানায় তাঁর পরিবারকে। বাবা বনমালীচরণ মণ্ডলের চোখে গর্বের মাঝেও কোথাও যেন লুকিয়ে ছিল এক উদ্বেগ,’ও যেন নিরাপদে ফিরে আসে।’ এই প্রসঙ্গেই সাম্প্রতিক নদিয়ার এক শিক্ষকের এভারেস্ট জয় করে নেমে আসার পথে প্রাণ হারানোর ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। এরই রেশ টেনে তিনি বলেন,’এই ঘটনায় আমাদের উদ্বেগ কিছুটা বেড়েছে। তবু আজকের দিনে খুশিই বেশি।’ এই প্রসঙ্গে আরও একটা কথা না বললেই নয়, লক্ষ্মীকান্তর পর্বতারোহণের প্রস্তুতির শুরু থেকেই কলকাতা পুলিশের সহানুভূতি ও সমর্থন ছিল। পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা নিজে তাঁকে যাত্রার আগে শুভেচ্ছা জানান। কাঠমাণ্ডুতে শুরু থেকেই তাঁর পাশে ছিলেন কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অলক সান্যাল এবং ইনস্পেক্টর অমিত মাইতি। ২০১৩ সালে কলকাতা পুলিশ আধিকারিক উজ্জ্বল রায়ও। তখন তিনি ছিলেন শ্যামপুকুর থানার ওসি। সোমবার সকালেই তিনি বলেন,’আমি শুরু থেকেই লক্ষ্মীকান্তর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলাম। অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছিলাম। ওর জেদ আর সাহস দেখে বুঝেছিলাম, শিখর জয় করবেই।’