আপাতত জামিন পেলেন না শর্মিষ্ঠা পানোলি। তিনি জামিন পাবেন কি না তার জন্য তাঁকে অপেক্ষা করতেই হবে ৫ জুন পর্যন্ত। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান নিয়ে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে শর্মিষ্ঠা পানোলিকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। এই গ্রেপ্তারির বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
আদালত সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার কিছু পর এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পার্থ সারথি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে। বিচারপতি ওই তরুণীর অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেননি। এই প্রসঙ্গে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘বাক স্বাধীনতা থাকলেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা যায় না।’ তবে তাঁর বিরুদ্ধে আর নতুন করে অভিযোগ করা যাবে না বলে স্পষ্ট করেছেন তিনি। পাশাপাশি শর্মিষ্ঠা মামলায় বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ,’গার্ডেনরিচ থানার এফআইআর-কে প্রথম মামলা হিসেবে ধরতে হবে। অন্যান্য এফআইআর গুলো নিয়ে এখনই কোনও ব্যবস্থা নয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্য যেন এই মুহূর্তে নতুন কোনও এফআইআর গ্রহণ না করে। ৫ জুন রাজ্যকে কলকাতা হাইকোর্টে কেস ডাইরি পেশ করতে হবে। এরপরই আদালত অন্যান্য এফআইআর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’ আগামী ৫ জুন ফের এই মামলা শুনবে আদালত। অর্থাৎ, তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর না হলেও সাময়িক স্বস্তি পেলেন শর্মিষ্ঠা।
প্রসঙ্গত,গত শুক্রবার রাতে গুরুগ্রাম থেকে ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার এই আইনের ছাত্রীকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে গার্ডেনরিচ থানায় প্রথম অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতেই হয় গ্রেফতারি। এরপর আলিপুর আদালতে তোলা হলে ১২ জুন পর্যন্ত তাঁকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। এরপরই তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, তিনি ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বলিউড তারকাদের নীরবতা নিয়ে বিতর্কিত পোস্ট করেছিলেন। সেই মন্তব্যে তিনি আপত্তিজনক ভাষা প্রয়োগ করেন। পুলিশের দাবি, পানোলি সেটা ইনস্টাগ্রামে আপলোড করেছিলেন। যাতে নির্দিষ্ট একটি ধর্ম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ‘অসম্মানজনক ও অপমানকর’ মন্তব্য লেখা ছিল। তবে যে বিতর্কিত ভিডিওটি শর্মিষ্ঠা ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে ডিলিটও করে দেন। ওই আপত্তিকর ভিডিও পোস্ট করার জন্য পরবর্তী সময়ে ক্ষমাও চেয়ে নেন শর্মিষ্ঠা। তাতেও অবশ্য লাভ হয়নি৷ তরুণীকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হলে তাঁকে ১৩ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় আদালত। আদালত থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় ক্ষোভের সঙ্গে শর্মিষ্ঠা চিৎকার করে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় থেকেও আমার যে হয়রানি হল, এটাকে গণতন্ত্র বলে না।’ এদিকে এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশ নিজেদের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করেছিল এবং বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে জানিয়েছিল, কোথায়, কোন অভিযোগের ভিত্তিতে, কেন শর্মিষ্ঠাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে। এই নিয়ে ভুল তথ্য এবং বিভ্রান্তি না ছড়ানোর অনুরোধও করা হয়েছে পুলিশের তরফে।