উপ–রাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করলেন জগদীপ ধনকড়। তাঁর সিদ্ধান্ত জানিয়ে সোমবার তিনি রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েও দিয়েছেন বলে সূত্রে খবর। আর এই পদত্যাগ পত্রে নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগের কথাও জানিয়েছেন তিনি। পদত্যাগপত্রে ধনকড় লেখেন, নিজের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার দিকে নজর দিতে গিয়ে তাঁর পদত্যাগ ছাড়া উপায় ছিল না।রাষ্ট্রপতিকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে তিনি এও লেখেন, ‘স্বাস্থ্য পরিস্থিতির দিকে নজর দিয়ে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলার জন্য, আমি সংবিধানের ৬৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে অবিলম্বে কার্যকরভাবে ভারতের উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করছি। আমার মেয়াদকালে আমাকে সমর্থন এবং আমাদের চমৎকার কাজের সম্পর্কের জন্য আমি ভারতের মাননীয় রাষ্ট্রপতির প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সম্মানিত মন্ত্রী পরিষদের প্রতি আমি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা এবং সমর্থন অমূল্য, এবং আমার দায়িত্ব পালনকালে আমি অনেক কিছু শিখেছি।’
পাশাপাশি তিনি এও লেখেন, ‘সকল মাননীয় সংসদ সদস্যের কাছ থেকে আমি যে আস্থা এবং স্নেহ পেয়েছি তা সর্বদা আমার স্মৃতিতে লালিত থাকবে। আমাদের মহান গণতন্ত্রে উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে আমি যে অমূল্য অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি তার জন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।“
এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভারতের অসাধারণ অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং অভূতপূর্ব উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করা এবং তাতে অংশগ্রহণ করা একটি সৌভাগ্য এবং তৃপ্তির বিষয়। দেশের ও জাতির ইতিহাসের এই পরিবর্তনের সময় আমি দেশের সেবা করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। এই সম্মাননীয় পদ ত্যাগ করার সঙ্গেই, ভারতের বিশ্বব্যাপী উত্থান এবং অসাধারণ সাফল্যে আমি গর্বিত এবং দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতি অটল আস্থা রাখছি।’
প্রসঙ্গত, গত মাসে কুমায়ুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন উপ–রাষ্ট্রপতি। নিজের বক্তব্য শেষ করে মঞ্চ থেকে নামার পরেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি।দর্শকাসনে ছিলেন তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু তথা নৈনিতালের প্রাক্তন সাংসদ মহেন্দ্র সিং পাল।তাঁকে জড়িয়ে ধরে তাঁর কাঁধে মাথা রেখেই অচৈতন্য হয়ে পড়তে দেখা যায় উপরাষ্ট্রপতিকে।কিছুক্ষণের মধ্যেই অবশ্য তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, ১৯৮৯ সালে ঝুনঝুনু সংসদীয় আসন থেকে নবম লোকসভায় নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৯০ সালে কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নিযুক্ত হন। ১৯৯৩–১৯৯৮ সালে আজমের জেলার কিষাণগড় নির্বাচনী এলাকা থেকে রাজস্থান বিধানসভায় নির্বাচিত। লোকসভা এবং রাজস্থান বিধানসভার গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে ইউরোপীয় সংসদে একটি সংসদীয় দলের উপনেতা হিসেবে একটি প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন। এরপর ৩০ জুলাই ২০১৯ থেকে ১৮ জুলাই ২০২২ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।