স্ব মেজাজে দিলীপ, ছত্রে ছত্রে বিঁধলেন রাজ্য সরকারকে

বেশ অনেকদিন ধরেই বঙ্গ বিজেপির কোনও অনুষ্ঠান বা মোদিশাহ মিটিং, সবকিছুতেই ব্রাত্য  দিলীপ ঘোষ। তবে এই নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনও মুখ খোলনেনি প্রাক্তন সাংসদ। তবে এবার পদে পদে কটাক্ষ ভরা আক্রমণে রাজ্য  সরকারকে জর্জরিত করলেন তিনি।

সংবাদ শিরোনাম দিঘার রথযাত্রা। আর এই দিঘার জগন্নাথ উৎসব নিয়ে দিলীপের বক্তব্য, সরকারি টাকায় উৎসব হচ্ছে। ওঁর জমানায় এটাই একমাত্র অ্যাচিভমেন্ট। ঠিক যেমন কলকাতার দুর্গাপুজো কার্নিভালে হয়। সরকারের অন্য কোনও উন্নয়ন নেই। রাস্তায় চাকরিহারা এবং চাকরি প্রার্থীরা বসে আছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় নেই। আগামী বছর স্কুলগুলি উঠে যাবে কিনা তার কোনো ঠিক নেই। এদিকে সামনে আবার বিধানসভা নির্বাচন। তাই ২৬ এর ভোটকে মাথায় রেখে এই উৎসব। পুরো প্রশাসনকে এটার পিছনে লাগিয়ে দিয়েছে।‘ 

কথা প্রসঙ্গে আসে  কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের দিঘায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করার ঘটনাও। এই প্রসঙ্গে দিলীপ বলেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে এর আগে কেউ রথ যাত্রা দেখেনি। আর কোথাও যেন রথযাত্রা হয়নি। ৬০০ বছর ধরে দেশে রথ যাত্রা হয়ে আসছে। কিন্তু সরকারি টাকায় এই ধরনের উৎসব। ওঁর মনে হচ্ছে উনি ওটা করে ভোট পেয়ে যাবেন। আমার খুব সন্দেহ আছে।সঙ্গে এও বলেন, ‘পুলিশকে অন্য কাজে দেখি না।কালীগঞ্জের ঘটনায় প্রমাণিত পুলিশ দুর্নীতিগ্রস্থ। বাংলা দুর্বৃত্তদের হাতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষকে ললিপপ দেখিয়ে ভোট জেতার চেষ্টা করছেন।‘ 

আর এই মুহূর্তে পুরী আর দিঘার জগন্নাথ নিয়ে চলছে প্রতিযোগিতা। এই প্রসঙ্গেও দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘জগন্নাথ দেব তার নিজের জায়গায় আছেন। মন্দির হচ্ছে ভালো কথা। বাকি সমস্ত কাজ ফেলে দিয়ে শুধু জগন্নাথ রথ যাত্রা হবে এটা কেন? ’ সঙ্গে এ প্রশ্নও রাখেন, ‘আর কোনও ইস্যু নেই? মানুষের আর কোনও সমস্যা নেই? এটা খুব বড় ভুল করছেন।‘ 

এরই পাশাপাশি ৪১ বছর পর ফের মহাকাশচারী পাচ্ছে ভারত, এই নিয়ে দিলীপ বলেন, ‘ভারতের প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান দুনিয়ার সামনে আমরা বারবার তুলে ধরেছি। খুব স্পর্শকাতর বিষয়। এর আগে বারবার তারিখ বদলেছে। ভারত যে মনোবল নিয়ে যেভাবে এগোচ্ছে আমার মনে হয় এই অভিযান সফল হবে। আমরাও সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করে আছি।‘ 

বঙ্গ রাজনীতির পাশাপাশি উঠে এল ইরান-ইজরায়েল প্রসঙ্গও। আর এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন সাংসদ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে বলেন, উনি হলেন আন্তর্জাতিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে সংযোজন, ‘ট্রাম্প একটা জোকারে পরিণত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যে ধরনের কথা বলেন আর আচরণ করেন সেরকম একটা আন্তর্জাতিক চরিত্র পাওয়া গেছে।‘ 

তবে ক্ষোভ উগরে দিলেন কালীগঞ্জ কাণ্ডে। তিনি স্পষ্টই জানান, ‘প্রকাশ্যে দিনের আলোয় এইভাবে বোমা নিয়ে কেউ বিজয় উৎসব করে কোনোদিন দেখিনি। যে মুসলমানরা বারবার তৃণমূলকে বাঁচায় সেই মুসলমান একটি শিশুকে মরতে হল। আর জি কর, বগটুই যেমন চাপা পড়ে গিয়েছে, এটাও তাইই হবে। ওই গরীব পরিবার হাহাকার করবে।‘ 

উঠে এল বাংলা বললেইপুশ ব্যাক’। অভিযোগ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রসঙ্গেও দিলীপ ঘোষ বলেন, কে পশ্চিমবঙ্গের আর কে বাংলাদেশের বোঝা যায়না। বাংলাদেশের লোক এখানে এসে আধার রেশন কার্ড করিয়ে নেয়। সত্যিই ওরা এপার বাংলা না ওপার বাংলা সেটা পরীক্ষা হওয়া উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen + eighteen =