দুর্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর সভায় কেউ আমন্ত্রণ জানাননি। মঙ্গলবার স্পষ্ট জানালেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তবে পাশাপাশি এটাও জানান, কর্মীরা ডেকেছেন, তাই তিনি যাবেন। কর্মীদের সঙ্গেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনবেন। সঙ্গে এও জানান, এক কর্মী হিসাবেই যাচ্ছেন সেখানে। নেতা হিসাবে নয়। মঞ্চ থাকার বিষয়টি পার্টি বলবে। এখনও মঞ্চে থাকার কথা তাঁকে কেউ বলেনি। আর সেই কারণেই তিনি থাকবেন আম জনতার মাঝেই। এরই রেশ ধরে দিলীপ ঘোষ এও মনে করিযে দেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে দিলীপ ঘোষ কর্মী হিসাবে থাকে, সমস্ত সভা সমিতিতে যায়।’ এখানেই শেষ নয়, একইসঙ্গে দিলীপ ঘোষ আরও এক পা বাড়িয়ে জানান, ‘দিলীপ ঘোষ তৈরি আছে। রাস্তায় রয়েছে। কর্মীদের মাঝে রয়েছে। যে কাজ আমায় দেওয়া হয়েছিল, তা আমি করেছি। এখন সুস্থ সবল রয়েছি। দল যে ভাবে ব্যবহার করবে, সে রকম ভাবেই কাজ করব। ম্যায় হু না।’
খুব স্বাভাবিক ভাবেই এরপর প্রশ্ন উঠেছে কেন আলিপুরদুয়ারের সভাতে যাননি তা নিয়েও। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের স্পষ্ট জবাব, আলিপুরদুয়ারের সভাতেও কেউ আমন্ত্রণ জানাননি। তবে টিভিতে ভাষণ শুনেছেন। কিন্তু দুর্গাপুরের ক্ষেত্রে যেহেতু তিনি সেখানকার লোকসভার প্রার্থী ছিলেন তাই যাচ্ছেন।
এর পাশাপাশি ফের উঠে এসেছে একুশে জুলাই প্রসঙ্গ। আর এখানেই তিনি বিঁধলেন দলের একাংশকে। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ এও বলেন, ‘একুশের জুলাই নিয়ে জল্পনা তো আমজনতা করবেই। একুশে জুলাই নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ তো প্রবল। সেটাই স্বাভাবিক। গুঞ্জন তো ছিলই। প্রত্যেকবারই থাকে। ডিম–ভাতের উৎসব হয়। কিন্তু আমি দেখলাম, এবার আমাদের পার্টির লোকেদেরও খুবই উৎসাহ ছিল। উৎসাহ তাঁদের মধ্যে ছিল, যাঁরা ওখানে ডিম ভাত খেয়ে এসেছেন। আমাদের বিজেপির লোকেদের কোনও সমস্যা নেই এই নিয়ে।’ এদিন দিলীপ এও বলেন, ‘আমি কারওর সার্টিফিকেট চাইনি। কাউকে ওড়াতেও চাই না। আমার আমলেই এঁরা আমার কাছে এসেছিলেন। তাদের নিয়ে পার্টি কাজ করে এগিয়েছে। এখন উত্তর খুঁজতে হবে দল তা হলে এখন এগোচ্ছে না কেন?
দিলীপ ঘোষের এই বক্তব্যে এটাও স্পষ্ট, শমীক যাই বলুন না কেন দলের মধ্যে কোথাও একটা মেরুকরণ চলছে। সে ‘আদি’ আর ‘নবীন’ শীর্ষকেও হতে পারে, আবার তা হতে পারে আদি বিজেপি এবং নব্য বিজেপি শীর্ষকেও।পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে, শমীক ভট্টাচার্য বিজেপির রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর যেদিন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ সেদিন নজরে এসেছে বিজেপির তৃণমূল স্তরে তাঁর জনপ্রিয়তা।তাঁকে দেখে কতটা উদ্বেল হয়েছিলেন সেদিনের বিজেপি কর্মীরা।
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে দিলীপ ঘোষে মুখেই শোনা গিয়েছিল, ‘একুশে কোনও না কোনও মঞ্চে থাকব।” তাতেই উসকে উঠেছিল তাঁর তৃণমূলে যোগের জল্পনা তৈরি হয়। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, দিলীপ ঘোষ কি তবে নতুন করে কিছু ভাবছেন! কিন্তু তার পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিজেপির সদ্য নির্বাচিত সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যান দিলীপ। আর তারপরই সামাজিক মাধ্যমে পোস্টে বিজেপি নেতা সাফ জানান, একুশে জুলাই নিয়ে কোনও মাথাব্যথাই নেই!
এদিকে এই বিষয়ে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। কুণালের চোখে দিলীপ ঘোষ আসলে ওয়ার্ল্ড কাপ জিতলেন। কারণ আগে অমিত শাহর সভায় যেহেতু সুকান্ত–শুভেন্দু আসতে দেননি। কিন্তু এখন দিলীপ আবার ফিরে আসছেন। এটা বিজেপির অভ্যন্তরণী লড়াই। এরপরই দিলীপের হয়ে সুর চড়ান রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘দিলীপ ঘোষ অন্য দলের নেতা নাকি? তিনি পার্টির সঙ্গে ছিলেন, আছেন, থাকবেন।’