জমা জল মশার বাড়বাড়ন্তের বড় কারণ। আর মশা বৃদ্ধি মানেই মশাবাহিত রোগেরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয় প্রবল ভাবেই। এদিকে পুরসভার বিরুদ্ধে কলকাতাবাসীর একাংশের অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে সেই জমা জলের খোঁজে বাড়ি-বাড়ি পুর-অভিযান ঠিক ভাবে হচ্ছে না। পুরসভার কন্ট্রোল রুম থেকে শুরু করে ‘টক টু মেয়র’ অনুষ্ঠানেও এ বিষয়ে সরব হয়েছেন অনেকে।
এদিকে পুর-কর্তৃপক্ষও স্বীকার করে নিয়েছে, কলকাতায় ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে।তবে এর জন্য পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা আমজনতার দিকেই এর দায় ঠেলছেন। তাঁদের বক্তব্য, অনেক বাড়ি-আবাসনে পুরকর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। কর্মীরা ঢুকতে চাইলে অপমান করে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বহু এলাকায় কাজই করা যাচ্ছে না। এর পাশাপাশি পুরসভা সূত্রে এও জানানো হয়েছে, বাড়ি-বাড়ি জমা জলের সন্ধান, কারও জ্বর হয়েছে কিনা দেখার জন্যে ওয়ার্ড-পিছু ১২ জন করে কর্মী রয়েছেন। আবার ফাঁকা জায়গায় মশার লার্ভা নষ্ট, জঞ্জাল সাফাইয়ে ৬-১২ জন কর্মী বরাদ্দ।
কিন্তু আদৌ কাজ হচ্ছে কিনা তা নিয়ে তৈরি হচ্ছে সংশয় কারণ, ই এম বাইপাস লাগোয়া মুকুন্দপুরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ‘কোভিড আবহে আগেও দু’সপ্তাহ অন্তর পুরকর্মীরা এলাকায় এসে স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতেন। সেই সঙ্গে ফাঁকা জায়গায় স্প্রেও করা হতো। কিন্তু গত দু’বছর ধরে সে সব বন্ধ। সে কারণেই তল্লাটে মশার বাড়বাড়ন্ত।’ একই অভিযোগ শোনা গেছে তিলজলার থেকেও। সেখানকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ওই এলাকায় বেশ কিছু ফাঁকা জমি রয়েছে যা মশার আঁতুড়ঘর। নিয়মিত স্প্রে না করার কারণেই এই পরিস্থিতি। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাদের আবার যুক্তি, তিলজলা এলাকা বা ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডে সব মিলিয়ে বাসিন্দা ৭৫ হাজারের কিছু বেশি। কিন্তু দু’টি ওয়ার্ডেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় কর্মীর সংখ্যা একই। ফলে সব জায়গায় সমান সংখ্যক কর্মী প্রতিদিন পাঠানো সম্ভব নয়। তবুও চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে কলকাতা পুরসভার মুখ্য পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাসের দাবি, ‘মশাবাহিত রোগ মোকাবিলায় ২.৫৬ বর্গ কিলোমিটার-পিছু ৪ জন পুরকর্মী থাকা আবশ্যিক। জাতীয় নীতিতে এটাই বলা রয়েছে। এর থেকে বেশি কর্মী আমাদের রয়েছে।’ কিন্তু জন-ঘনত্বের রকমফেরে ওই মানদণ্ড নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।