তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তাও পাত্তা দিচ্ছেন না দক্ষিণ দমদম পৌরসভার এক কাউন্সিলর। মমতা স্বয়ং যেখানে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন, মহিলা কর্মীদের অসম্মান করা যাবে না, এরপরও মহিলা কর্মীদের অসম্মান করার অভিযোগ উঠল দক্ষিণ দমদম পৌরসভার কাউন্সিলর রাজু সেনশর্মার বিরুদ্ধে। ঘটনার সূত্রপাত, একুশের সভায় না যাওয়ায় এক মহিলা পুর স্বাস্থ্যকর্মীকে নিয়ে। তিনি সেদিনের সভায় না যাওয়ায় বরখাস্ত করার অভিযোগ ওঠে এই রাজু সেন শর্মা নামে ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। নিগৃহীতার অভিযোগ, শুধু বরখাস্তই নয়, তাঁর বাবাকে তুলে অশ্রাব্য কথা বলেছেন এই কাউন্সিলর।
এই ঘটনার একটা ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। মোবাইলে গোটা ঘটনা বন্দি করেছেন কেউ একজন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কাউন্সিলরের সঙ্গে ওই মহিলা কর্মীর বাগবিতণ্ডা হচ্ছে। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, কাউন্সিলর বলছেন, ‘যা ইচ্ছা করে নিন। যারা দিদির প্রোগ্রামে যেতে পারে না, তাদের এই ওয়ার্ডে কাজ হবে না। আপনারা পলিটিক্যাল বাবাদের যা করার আছে করে নিক।’ তখনই ওই মহিলা আঙুল উঁচিয়ে চিৎকার করে হুঁশিয়ারি দেন , বাবা তুলে কথা না বলার জন্য। উত্তরে কাউন্সিলর বলেন, ‘আপনাকে ছাড়লে বাকিদেরও ছাড়তে হবে।’ প্রত্যুত্তরে ওই মহিলা বলেন, ‘আমরাও মানুষ, আমরাও খেটে খাই।’ সঙ্গে ফের প্রশ্ন করেন, বাবা তুলে কথা বলা হচিছে কেন তা নিয়ে। এরপরই কাউন্সিলর আরও এক পা বেশি পদক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘এটা আমার লাস্ট ওয়ার্নিং। যে যা বলার আমাকে বলবে, তার বাপের কত দম রয়েছে, আমি দেখে নেব।’
যাঁরা এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনেছেন, তাঁরা জানিয়েছেন, ওই মহিলারা ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত। ঘটনাটি ২২ জুলাইয়ের। কাউন্সিলর রাজুর কার্যালয়ে এই মহিলাদের ডাকা হয়েছিল। সেখানেই তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। নিগৃহীত মহিলার বক্তব্য, ‘আমাকে একাই বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি বেশি প্রটেস্ট করেছিলাম, কারণ আমার গায়ে লেগে গিয়েছিল কথাটা।’
যদিও কাউন্সিলর রাজু সেন শর্মার বক্তব্য, ‘ভিডিয়ো বললে ভুল হবে, ওটা একটা অডিয়ো ক্লিপিংস ছিল। ওই ভয়েসটা আমার ভয়েস নয়। আমার অফিসে কিছুই হয়নি। আপনি তো আমার সঙ্গে কথা বলছেন, সেটা শুনেই বুঝতে পারছেন। এটা আমার অফিসেরই নয়। বিজেপির কিংবা বিরোধীদের আমার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা। দলকে জানিয়েছি। আমি সাইবার ক্রাইমকে জানিয়েছি। তদন্ত করলে আসলটা বেরিয়ে আসবে।’
এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, ‘তৃণমূলের নেতারা মহিলাদের সঙ্গে কী কী ঘটনা ঘটাচ্ছে, তা তো সকলেই দেখতে পাচ্ছেন। ওঁ বলছেন, আমার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, ওঁকে একবার দেখার ইচ্ছা আছে। একুশের জুলাইয়ের সভায় গিয়েছেন, এরকম আশি ভাগ মানুষই চাপের মুখে পড়ে গিয়েছেন।’