আদালতে নথি বিকৃতির মতো গুরুতর অভিযোগ। যা ‘গুরু পাপে লঘু দণ্ড’ হিসেবে দেখছে আদালত। ঘটনার সূত্রপাত এক ছাত্রী বিয়ে না করে আইন নিয়ে পড়াশোনা করতে চাওয়ার ঘটনায়। এরপর তাঁকে লাগাতার হেনস্থার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় কিছু মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় হুগলি জেলার চণ্ডীতলায়। এরপরই ছাত্রী আদালতের দ্বারস্থ হন। হুগলির চণ্ডীতলার সেই ছাত্রীকে মারধর, শ্লীলতাহানি, অত্যাচারের ঘটনায় আদালতের নথি বিকৃত করে এক অভিযুক্তকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ মামলাকারীর। একইসঙ্গে ওই তরুণী শ্লীলতাহানির মতো সংবেদনশীল অভিযোগ করার পরেও থানা বা এসপি অফিস কোনও পদক্ষেপ না করায় একজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ ও বাকি তিনজন পুলিশকে সেন্সর করেন এসপি। তবে এই ঘটনায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার নির্দেশ, একই অর্ডারে হাতের লেখা এবং পরে কেটে দেওয়ায় প্রাথমিক ভাবে বোঝা যাচ্ছে কিছু গোলমাল হয়েছে। এই নিয়ে শ্রীরামপুর কোর্টের এসিজেএম-এর কাছে বিষয়টি দেখার জন্য পাঠানো হয়। তাঁকে এর ব্যাখ্যা দিয়ে রিপোর্ট দিতে হবে বলে নির্দেশ দেন বিচারপতি।
এদিকে এসপির রিপোর্ট অনুযায়ী, অভিযোগ না নেওয়ায় তিনি বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন। আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, এটি যথেষ্ট কি না তা নিয়ে। ২১ থেকে ২৬ জুন বেশ কয়েকটা মেল তার কাছে গেলেও একটাও তিনি কেন পেলেন না তা নিয়েও সন্দিহান আদালত। ২৫ জুলাই তদন্তে অগ্রগতির রিপার্ট দিতে হবে পুলিশকে। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, অভিযোগের পরেও কেন ৩৫৪ ধারা যোগ করা হয়নি তা নিয়েও। যে মেল এসপি অফিসে গিয়েছিল, সেই মেলগুলি কোর্টের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সূত্রে খবর, হুগলি জেলার শ্যামসুন্দর পুর চণ্ডীতলা থানা এলাকার বাসিন্দা এক ছাত্রী হাজরা ল কলেজে আইনের ছাত্রী। বিয়ে না করে আইন নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য পাড়ার কিছু মাতব্বর এবং আত্মীয়দের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তোলেন ওই ছাত্রী। ভোটের সময় মে মাসে কলকাতা ছেড়ে গ্রামে যাওয়ার পর থেকে হেনস্থা করা হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। সঙ্গে এও জানিয়েছেন, পুলিশের কাছে একের পর এক অভিযোগ জানানোর পরেও এফআইআর করেনি পুলিশ বলে দাবি করেছিলেন অভিযোগকারিণী। এরপরেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই মহিলা। জেলা পুলিশে ভরসা না থাকায় বিচারপতি অমৃতা সিনহা গত জুন মাসে ডিসি চন্দননগর আলোকানন্দা ভাওয়ালকে তদন্তের ভার দিয়েছিলেন। মহিলার অভিযোগের পরেও পুলিশের একাংশ গা এলিয়ে চলেছে বলে অভিযোগ করা হয়। এই মামলায় এবার আরও কড়া নির্দেশ দিতে দেখা গেল বিচারপতি অমৃতা সিনহাকে।