নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উধাও, সমস্যায় একাধিক পুরসভা ও পুর নগরোন্নয়ন দফতর

অভিযোগ উঠেছিল পুর নিয়োগের ছত্রে ছত্রে রয়েছে দুর্নীতির। তাতে যেন সিলমোহর দিল ওএমআর শিট ‘উধাও’কাণ্ড। কারণ, পুরনিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি ওএমআর শিট চায়। যার জেরে বিপাকে একাধিক পুরসভা ও পুর নগরোন্নয়ন দফতর। কারণ অনেক পুরসভা থেকেই নিয়োগ সংক্রান্ত নথি উধাও হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে, যে ওএমআর শিট খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এই ইস্যুতে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের দফতরের শীর্ষ কর্তারা। কোথা থেকে ওএমআর শিটগুলির জোগাড় হবে, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিও গভীর চিন্তায়।

এদিকে সূত্রের খবর, পুর নিয়োগ ধৃত অয়ন শীলের সংস্থা এবিএস ইনফোজোন প্রাইভেট লিমিটেডের উপরই দোষ চাপিয়ে নিজেদের বক্তব্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে পেশ করতে চলেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। কারণ যেক’টি পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেখানে সবকটিতেই অয়ন শীলের সংস্থা তৃতীয় সংস্থা হিসাবে কর্মী নিয়োগের কাজে যুক্ত ছিল। তবে তাতে কতটা চিড়ে ভিজবে তা নিয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে। কারণ, এক্ষেত্রে অনেক পুরকর্তাকেই সমস্যায় পড়তে হবে বলে ইডি সূত্রে খবর। আর তা আঁচও করতে পেরেছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের শীর্ষকর্তারা। যে সময়ের নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে, সেই সময়ের যাবতীয় পরীক্ষার নথিপত্র জোগাড় করার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মাস দুয়েক আগে আলিপুরে সিবিআই বিশেষ আদালতে পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে এফআইআর দায়ের করে সিবিআই। এর পরে উত্তর ২৪ পরগনা-সহ অন্যান্য জেলায় মোট ১৪টি পুরসভায় তল্লাশি চালান তাঁরা। ওই সব পুরসভা থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রচুর নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে।

এই ঘটনায় তদন্তকারীদের দাবি, মূলত ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে প্রায় ৭০টির বেশি পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। ফিরহাদ হাকিমও দফতরের কর্তাদের দিয়ে তদন্ত চালিয়েছেন। ইডি মনে করছে, অয়ন শীলের সংস্থা যে সব উত্তরপত্রের মূল্যায়ন করেছে, সে সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়ে থাকতে পারে। ইডি- র পাশাপাশি এই তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই’ও। এদিকে সম্প্রতি পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০১৪ ও ২০১৭ সালের পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত নথি নগরোন্নয়ন দফতর ও মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের কাছে তলব করা হয়েছে। ওই সব নথিও ইডির হাতে এসেছে। সেগুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × three =