সত্যিই কি আলু খেলে হতে পারে ডায়াবিটিস, নাকি এই ধারণার পিছনে কোনও যুক্তিই নেই? এই বিতর্কে অবশেষ মুখ খুললেন কলকাতার বিশিষ্ট ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা।
তাঁরা জানাচ্ছেন, আলু খাওয়ার সঙ্গে সুগার হওয়ার সরাসরি কোনও যোগ নেই। তাই আলু খেলেই যে নিশ্চিতভাবে ডায়াবেটিস হবে এই বিষয়টা বলা যায় না। তবে এই সবজি নিয়মিত খেলে বাড়তে পারে ওজন। আর শরীরে মেদের বহর বাড়লে ইনসুলিন হরমোন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। আর সেই কারণে পিছু নিলেও নিতে পারে ডায়াবেটিস। অর্থাৎ আলু খাওয়ার সঙ্গে হাই ব্লাড সুগারের সরাসরি যোগ না থাকলেও, পরোক্ষ যোগ অবশ্যই রয়েছে। তাই এবার থেকে আলু খাওয়ার আগে এই বিষয়টা মাথায় রাখতেই হবে।
যে কোনও সুস্থ মানুষ প্রতিদিন অল্প একটু আলুর তরকারি খেতেই পারেন। তাতে খুব একটা সমস্যা তো হবেই না, উল্টে উপকারই পাবেন। তবে এই কথা শুনে আবার শুধু আলুর উপর ভরসা রাখলে চলবে এমনটাও ঠিক নয়। বরং এই সবজির পাশাপাশি অন্যান্য মরসুমি শাক, সবজির পদও থাকুক পাতে, এমনটাই জানাচ্ছেন ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা। সঙ্গে আশা করছেন, এই নিয়মটা মেনে চললেই কাউকেই বিপদে পড়ে কষ্ট পেতে হবে না।
পাশাপাশি তাঁরা এও জানান, আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুবই বেশি। আর সেই কারণে এই সবজি খেলে হঠাৎ-ই সুগার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত যাঁরা ভুলেও রোজ রোজ আলু খাওয়া উচিত নয়। আর একান্তই যদি আলুর নেশা ছাড়তে না পারেন, তাহলে নিজের চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিদের পরামর্শ মতো একটা পার্সোনালাইজড ডায়েট চার্ট বানিয়ে নিতে হবে।
এদিকে আবার গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আলু অনেকক্ষণ ধরে সিদ্ধ করে খেলে তাঁর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশ কিছুটা কমে যায়। তাই একান্তই যদি আলু খেতে হয়, তাহলে তা অনেকক্ষণ ধরে সিদ্ধ করে তরকারিতে ব্যবহার করার পরামর্শই দিচ্ছেন ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞরা। তবে অন্যান্য শাক-সবজি সহযোগে অল্প পরিমাণে আলু খাওয়া মঙ্গল। এতে সুগার থাকবে বশে। এমনকী ওজনকেও বিপদসীমার নিচে ধরে রাখতে পারবেন।
তবে এটাও তাঁরা জানাতে ভোলেননি, সাধারণ আলুর তুলনায় রাঙা আলু কিন্তু স্বাস্থ্যগুণে অনেক বেশি উপকারী। শুধু তাই নয়, মিষ্টি আলুর জিআই ভ্যালুও কিন্তু অনেকটাই কম। তাই ডায়াবিটিস রোগীরা চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো রাঙা আলু খাওয়া যেতেই পারে।