‘ধর্ষককে নিয়ে তর্জা নয় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ফায়ার করুন। অন্য রাজ্যের রেফারেন্স নয়, অপরাজিতা বিলকে কার্যকরী করুন।’ কসবা কাণ্ডে এমনই বার্তা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সহ–সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তী এবং যুবনেত্রী রাজন্যা হালদারের।
প্রসঙ্গত, এই য়ুগল আরজি করের আন্দোলনের আবহে তৈরি করেছিলেন প্রতিবাদী শর্ট ফিল্ম। যা ভাল চোখে দেখেনি দল। সাসপেন্ডও হতে হয়। এই সাসপেন্ডের ক্ষেত্রে অবশ্য আপতত দল নতুন করে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে শর্ট ফিল্মটি ওটিটিতে দেখা গেলেও বিতর্কের পর থেকেই খানিকটা হলেও যেন নিভৃতবাসেই চলে গিয়েছিলেন এই যুগল। এবার কসবা কাণ্ডে যখন ফের উত্তাল শহর কলকাতা তখন ফের প্রতিবাদে সরব তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সহ–সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তী এবং যুবনেত্রী রাজন্যা হালদার। ফেসবুকে করলেন দীর্ঘ প্রায় ৫মিনিটের লাইভ। আর এই লাইভ থেকে দিলেন স্পষ্ট বার্তা, ‘রাজনীতি নয়। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে বিচার হোক। অভিযুক্তদের এমন শাস্তি হোক যা দেখে শিক্ষা নিক সমাজ।’ একইসঙ্গে রাজ্যের পক্ষে দাঁড়িয়ে অপরাজিতা বিল কার্যকর করার পক্ষেও জোরালও সওয়াল করলেন। লাইভের ক্যাপশনে লেখা, লাইভের শুরুতেই ইঙ্গিতপূর্ণভাবে রাজন্যাকে বলতে শোনা যায়, ‘সামাজিক রাজন্যা ও সামাজিক প্রান্তিক, মানুষ রাজন্যা ও মানুষ প্রান্তিক হিসাবে আজ আমরা এই লাইভ করছি।’ পাশাপাশি ক্ষোভ উগরে দেন ব্যাভিচারীদের বিরুদ্ধে।
এদিকে প্রান্তিক এই কসবা প্রসঙ্গে প্রান্তির জানান, ‘অনেকে হয়তো ভাববে আমরা কী রাজনৈতিক কথা বলব, সেদিকে নজর রাখবে। কিন্তু আমি বা আমরা শুধু এটুকু বলতে চাই যে ঘটনা ঘটেছে তা রাজনীতি, ধর্ম, বর্ণ সবকিছুর ঊর্ধ্বে। যাঁরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাঁদের যেন সর্বোচ্চ সাজা হয়। এমন সাজা হোক যাতে বাকিদের বুঝিয়ে দেওয়া যায় ভবিষ্যতে কেউ যদি এমন ঘটনা ঘটায় তাঁদেরও এমনই হাল হবে।’
কসবা কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দাপুটে নেতা তা ইতিমধ্যেই জলের মতো পরিষ্কার। তার সঙ্গে তৃণমূলের হেভিওয়েটদের ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করে তোপ দেগে চলেছে বিরোধী শিবির। পাল্টা বিজেপিকেও একহাত নিচ্ছে ঘাসফুল। এমতাবস্থায় প্রান্তিক–রাজন্যাদের সাফ কথা, ‘তৃণমূলের অনেকের অন্য রাজ্যের প্রসঙ্গ টেনে এনে আনছেন, আমি এটাকে সমর্থন করতে পারছি না। একইসঙ্গে বিরোধী দলও এখানে রাজনীতি করে সেটাকে আমরা সমর্থন করি না। এটা একটা ক্রাইম। অভিযুক্ত তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিল কি ছিল না সেটা এখানে বিচার্য নয়। একটাই কথা, সাজা চাই।’ পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘এখন যা অবস্থা তা দেখে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম তো মনে করবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আমরা নিরাপদ নই। যখন একটা বীজ থেকে একটা গাছ জন্মাচ্ছে, তখনই যদি মনে হয় তার মধ্যে কোনও সমস্যা আছে, খারাপ কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। আর তখনই যদি তাঁকে সাবধান করে দিতাম তাহলে হয়তো আজকে এই দিন দেখতে হত না।’