তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হলের পাশের ঘর ভাঙা হয়নি বলে দাবি করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আরও দাবি, আরজি করের পড়ুয়াদের জন্য ‘রেস্ট রুম’ তৈরির কাজ হচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে ‘মিথ্যা প্রচার’ হচ্ছে।
এদিকে আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্তে প্রথম থেকেই প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে। যে সেমিনার হল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল, তার পাশেই একটি ঘর ভাঙা নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। নবান্নের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে সোমবার এ নিয়ে মন্তব্য করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘অনেক জায়গায় প্রমাণ লোপাটের কথা বলা হচ্ছে। আমি প্রমাণ লোপাট করতে যাব কেন? কাকে বাঁচানোর জন্য করতে যাব? কেউ আমাদের বন্ধু নয়, কেউ আমাদের শত্রুও নয়। আইন আইনের পথে চলবে।’ তাঁর সংযোজন, ‘কেউ আমার নয়, আমিও কারও নই। আমি যখন একটা চেয়ারে বসেছি, তখন আমি চেয়ারকে সম্মান দিতে জানি। অনেক অসম্মান করেছেন মিথ্যা কথা বলে, কুৎসা রটিয়ে। আর করবেন না। সত্যিটা জেনে নিন।’
প্রসঙ্গত, ওই ঘর ভাঙার জন্য পূর্ত দফতরকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। সেই সংক্ৰান্ত একটি চিঠি প্রকাশ্যে এসেছে। যেখানে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে পূর্ত দফতরকে ভাঙার নির্দেশ দিতে দেখা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে বলছেন ওখানেই কেন রেস্ট রুম করতে গেল? এখানে অন্য কোনও ইনটেনশন ছিল না। রেস্ট রুম ছিল না বলে মেয়েটিকে সেমিনার হলে থাকতে হলো। আমাদের ইচ্ছা ছিল, যাতে ডাক্তারদের সেমিনার হলে না থাকতে হয়, সেই কারণে রেস্ট রুম বানানোর জন্য কাজ হচ্ছিল।’
অন্যদিকে, নির্যাতিতার মা-বাবাকে আর্থিক সাহায্যের কথা বলা হয়েছিল, এমন অভিযোগও করা হয় বিভিন্ন মহলে। এই বিষয়টি নিয়েও ‘মিথ্যা প্রচার’ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অনেকে বলছেন আমি টাকার কথা বলেছি। আমি মোটেই বলিনি। আমাকে প্রমাণ দেখাক, কোথায় আমি টাকার কথা বলেছি? মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। এগুলি অপপ্রচার, চক্রান্ত।’ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, নির্যাতিতার মা ও বাবার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের আগেই চিকিৎসক সংগঠনের তরফে ক্ষতিপূরণের দাবি তোলা হয়েছিল। নির্যাতিতার মা ও বাবাকে মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কী বলেছিলেন, সেটাও এদিন জানান তিনি। মমতা বলেন, ‘আমি বাবা ও মাকে বলেছিলাম, মৃত্যুর বিকল্প টাকা হয় না। আপনারা খুব মর্মাহত। আমরাও মর্মাহত। কিন্তু যদি কোনও দিন মনে করেন, আপনার মেয়ের স্মৃতিতে কোনও ভাল কাজ করবেন, আমাদের বলবেন। সরকার পাশে আছে।’