রাজ্য়ের ভাঁড়ারে টান, প্রশ্নের মুখে দুর্গাপুজোর অনুদান

স্বাস্থ্য, পূর্ত, পুলিশ-সহ সরকারি দফতরে প্রয়োজন ছাড়া নতুন করে নিয়োগ নয়। এমনকী নতুন করে তৈরি করা হবে না কোনও সরকারি ভবনও। সম্প্রতি  মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকার নেতৃত্বে সরকারি দফতরের গুরুত্বপূর্ণ আমলাদের নিয়ে এমপাওয়ার্ড কমিটির বৈঠকে এমনই বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রে খবর। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দফতরের উচ্চ পদস্থ আমলাদের নিয়ে মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা ও অর্থসচিব মনোজ পন্থকে নিয়ে এই এমপাওয়ার্ড কমিটির বৈঠক হয়েছিল। এদিকে আবার রাজ্য সরকারের একাধিক পদে নিয়োগ প্রয়োজন। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলিতে বহু শূন্যস্থান রয়েছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছিল, ১০ লক্ষ চাকরি প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু মামলার গেরোয় নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে নিয়োগের ব্যাপারে আলোচনা করতেই সম্প্রতি এমপাওয়ার্ড কমিটির বৈঠক হয়। সূত্রের খবর, বৈঠকে এও বলা হয় যে, বিভিন্ন দফতরে যে সংখ্যায় নিয়োগ দরকার, তার তালিকা তৈরি করতে হবে। তা পেশ করতে। একান্ত প্রয়োজন হলেই সেই তালিকা থেকে ৫০ শতাংশ নিয়োগ করা যেতে পারে। কিন্তু তার বেশি নয়।

এখানেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা।  বিরোধীদের প্রশ্ন, এতই যখন কোষাগারে টান, তখন পুজো কমিটিগুলোকে ৩৬৫ কোটি টাকা অনুদান কী করে দেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, এবার ৪৩ হাজার ক্লাবকে ৮৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। তাতে খরচ পড়ছে ৩৬৫ কোটি টাকা। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ কটাক্ষ করে জানান, ৬০০ কোটি টাকা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রযান বানিয়ে চাঁদে পাঠিয়ে ভারতের পতাকা পুঁতে এসেছেন। আর ওঁ গত দু’বছরে ৬০০ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছেন। এই বছর পৌনে চার কোটি টাকা খরচ করছেন। একবার ভেবে দেখুন এই টাকা দিয়ে কত মানুষের চাকরি হত।’ একইসুর সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যেরও। তাঁর বক্তব্য, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় উৎসব-মেলা-খেলা, হাঙ্গামার প্রবণতা তৈরি করেছেন। আর এগুলো বৈধকরণের জন্য সরকারের একটা নতুন প্রবণতা তৈরি হয়েছে সরকারি অনুদান। দেখা যাবে বেশিরভাগ ক্লাবই তৃণমূল পরিচালিত। সরকারি কর্মীরা প্রাপ্য ডিএ পান না, মিড ডে মিল পায় না, স্কুল উঠে যাচ্ছে, সেখানে সরকার উৎসবের বীভৎসতা পালন করছে। ক্লাবগুলোর নৈতিকতা থাকলে সেই টাকা ফেরত দেবে।’

যদিও তৃণমূল নেতা শান্তনু সেনের পাল্টা বক্তব্য, ‘বিরোধীরা বলছিল, এই টাকা গিয়ে ক্লাবগুলো নাকি মদ মাংস খেয়ে উড়িয়ে দেবে। কিন্তু প্রচুর ক্লাব সদর্থক ভূমিকা পালন করেছিল। যুবসমাজকে উন্নত করার চেষ্টা। দুর্গাপুজোকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 5 =