চুলের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্যে যেমন একটি সঠিক স্কিনকেয়ার রুটিন ফলো করার সঙ্গে নজর দিতে হবে ডায়েটেও। এমনই পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। ঘন এবং রেশমের মতো চুল পাওয়ার জন্যে নিয়মিত প্রোটিন এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াও প্রয়োজন।
চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বায়োটিন। এই উপাদান চুলের যেমন জেল্লা বাড়ায় ঠিক তেমনই চুলের বৃদ্ধিতেও কার্যকরী। আর এই বায়োটিনের অন্যতম উৎস হল ডিম। সেই কারণে পুষ্টিবিদেরা দিনে অন্তত ১টি ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন।
ভিটামিন বি-৭-এর অপর এক নাম বায়োটিন। এই ভিটামিন জলে দ্রবীভূত তাই শরীরে সঞ্চিত থাকে না। বায়োটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে এই ভিটামিনের ঘাটতি মেটে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভিটামিন বি-৭-এর ঘাটতিতে চুল ওঠে কি না তা নিয়ে। এই উত্তরের খোঁজে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, যে সব মহিলারা চুল পড়া নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁদের ৩৮ শতাংশের মধ্যে ছিল বায়োটিনের ঘাটতি এবং তাঁরা চুল পড়া নিয়ে অভিযোগও জানিয়েছিলেন। তাই চুল পড়া নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে চিকিৎসকরাও অনেক সময়ে বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট দিয়ে থাকেন।
ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনে প্রকাশিত আরও একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয় যে, চুল পড়া কমাতে বায়োটিন বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই গবেষণায় ১৮ জনের উপর পরীক্ষা চালানো হয়। বায়োটিন খাওয়ার পরে তাঁদের চুল ও নখের অবস্থা উন্নতি হয়। চুল পড়া কমে। তাই চুলের সুস্বাস্থ্যে বায়োটিনের ভূমিকা যে অপরিসীম, সেই কথা আর বলার অপেক্ষা থাকে না।
ডিমে প্রচুর পরিমাণে বায়োটিনের সন্ধান মেলে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথের তথ্য অনুযায়ী, একটি ডিমে ১০ মাইক্রোগ্রাম বায়োটিন থাকে। নিয়মিত ডিম খেলে শরীরও ভালো থাকে। এদিকে চুলের টেক্সচারও উন্নত হয়। ডিমে বায়োটিনের পাশাপাশি সালফারের উপস্থিতির খোঁজও মেলে। গবেষণাতেও এমন উল্লেখ পাওয়া গিয়েছে। বায়োটিন এবং সালফার দুই চুলের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
পাশাপাশি অনেকে এও মনে করেন, চুলে ডিম লাগালেও হয়তো একই উপকার পাওয়া যায়। স্ক্যাল্পে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ হয়। তাই ডিমের হেয়ার প্যাক ব্যবহারের প্রচলনও রয়েছে। ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে টক দই এবং নারকেল তেল মিশিয়ে চুলে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। চুলের রুক্ষ ভাব কেটে যায়। চুল হয় নরম। তবে এই ট্রপিকাল অ্যাপলিকেশনে চুল পড়া বন্ধ হয় কিনা, তার সপক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা এও জানিয়েছেন, দিনে অন্তত একটা ডিম খাওয়া উচিত। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুযায়ী, অ্য়ামিনো অ্যাসিডে ঠাসা ডিম শরীরে উপযুক্ত প্রোটিনের ঘাটতি মেটায়। ফলে, চুল পড়াও কমে। এই গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয় যে, চুলের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে সপ্তাহে ২-৩ টি ডিম খাওয়া উচিত। তাহলেই মিলবে উপকার।