বাংলাদেশের বিপুল আর্থিক প্রতারণার তদন্তে বড় সাফল্য ইডির

বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ভারতেই পুলিশের হাতে ধরা পড়েন পিকে হালদার নামে এক বাংলাদেশি নাগরিক। এরপর টানা কয়েক দফায় বিচার বিভাগীয় হেফাজতে থাকার পর শনিবার অভিযুক্ত পিকে হালদার, তাঁর ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মি হালদার সহ ছয় অভিযুক্তকেই আদালতে হাজির করা হয়। এই মামলার শুনানি ছিল ব্যাঙ্কশাল আদালতের স্পেশাল সিবিআই কোর্টে, বিচারক শুভেন্দু সাহার এজলাসে। তবে শনিবার কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের স্পেশাল ইডি-সিবিআই আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ হওয়ার কথা ছিল পিকে হালদারের। তবে সাক্ষী অনুপস্থিত থাকায় এদিন সেই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ পিছিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের রাজারহাটের বৈদিক ভিলেজের বোর্ড হাউস ১৫, গ্রিনটেক সিটি থেকে পিকে হালদারকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে পিকে হালদারের আরও ৫ সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পিকে হালদার সহ ৫জন অভিযুক্ত কলকাতার প্রেসিডেন্সি কারাগারে বন্দি রয়েছেন, অন্যদিকে মহিলা অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর নারী সংশোধনাগারে।

প্রসঙ্গত, পিকে হালদার সহ ছয়জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ প্রতিরোধ মামলায় শুনানি চলছে রাজ্যের আদালতে। বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও তছরুপের অভিযোগেই মামলা দায়ের হয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। আজ ব্যাঙ্কশাল আদালতে সেই মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ ছিল। কিন্তু সাক্ষী অনুপস্থিত হওয়ায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। এরই প্রেক্ষিতে পিকে হালদারের আইনজীবী বিশ্বজিৎ মান্না জানান , ‘শনিবার সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে ৬ অভিযুক্তের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি দায়রা আদালতেই সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিকে এই মামলায় নতুন করে প্রাণেশ কুমার হালদারের জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়েছে এবং সেই বিষয়টি নিয়ে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি আদালতে শুনানি হবে।’ এদিন সবমিলিয়ে পিকে হালদারের আইনজীবী আদালতে তিনটি পিটিশন দাখিল করেন। এই মামলায় অপর অভিযুক্ত আমানা সুলতানার শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটা মেডিক্যাল রিপোর্ট চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়। এছাড়াও, পিকে হালদারের মা লীলাবতী হালদারের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাঁকে কলকাতার নিজেব বাড়ি বৈদিক ভিলেজে পাঠানোর জন্যও আদালতে একটি আবেদন করা হয়।

এদিকে ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী জানান, প্রাণেশ কুমার হালদারের তরফে যে জামিনের যে আবেদন করা হয়েছে, তার বিরোধিতা করেছে ইডি। পাশাপাশি সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের যে মামলা করা হয়েছে, সেটিরও বিরোধিতা করেছে ইডি। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি এই মামলাগুলিতে শুনানি হবে এবং তারপরই সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে। আদালতে বকেয়া পিটিশনগুলি নিয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন তিনি। এদিকে আদালত সূত্রে খবর, আগামী ২০ ফেব্রুয়ারিই এই সমস্ত আবেদন শুনে সিদ্ধান্ত নিতে পারে আদালত।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 + 8 =