ঘড়িতে ভোর ৪টে। নজরে আসে সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বের হচ্ছে একের পর এক গাড়ি। আর এই প্রস্তুতি থেকে স্পষ্ট হয় ইডি আধিকারিকরা শুক্রবার হানা দিতে চলেছেন একাধিক জায়গায়। সকালের আলো ফোটার আগেই ইডি -র ১৫টি টিম পৌঁছে যায় কলকাতা বিমানবন্দরের পার্কিং-এর কাছে। সেখানে সবকটি টিম একত্রিত হওয়ার পর রওনা হয় বিভিন্ন দিকে। সঙ্গে থাকে কেন্দ্রীয় বাহিনীও। তবে হঠাৎ এই তৎপরতার কারণ সম্পরিকে ইডি সূত্রে খবর মেলে রেশন দুর্নীতির তদন্তেই অভিযানে নামছেন তাঁরা। এই ১৫টি টিমের কয়েকটি এগোতে থাকে উত্তর ২৪ পরগনার দিকে। যার মধ্যে ২টিম যায় বনগাঁর দিকে, কলকাতায় থাকে ৪টি টিম। অন্যদিকে বাসন্তী হাইওয়ে ধরে এগিয়ে যাচ্ছে বাকি ৯টি টিম। এরপরই নজরে আসে বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যর শ্বশুর বিনয় কুমার ঘোষের বাড়িতে পৌঁছান ইডি আধিকারিকরা। এখানে বলে রাখা শ্রেয়, শঙ্কর আঢ্য ও তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না আঢ্য দুজনেই কাউন্সিলর ছিলেন। সূত্রের খবর, রাজনীতির সূত্রে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল তাঁদের। কয়েকদিন আগে ইডি তলব করেছিল শঙ্কর আঢ্যকে। কিন্তু হাজিরা দেওয়ার বদলে কিছু নথি পাঠিয়ে দেন তিনি।
এদিকে সকাল ৮ টা নাগাদ বিজয়গড়ের একটি ফ্ল্যাটের চার তলায় হানা দেন ইডির আধিকারিকেরা। সঙ্গে পুরো আবাসন ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। যাতে বাইরে থেকে কেউ প্রবেশ করতে না পারেন। এদিকে সূত্রে খবর মেলে বিজয়গড়ের যে ফ্ল্যাটে হানা দিয়েছে ইডি, তাঁর মালিকের নাম কল্যাণ সিংহ রায়। তিনি পেশায় চ্যার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্ট।
এদিকে শহরের একেবারে বিপরীত প্রান্তে সিঁথিতে বিটি রোডের পাশেই এক স্বর্ণ এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে পৌঁছান ইডির আধিকারিকেরা। এটি গোপাল বণিক নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বাড়ি বলে জানা গিয়েছে। পেল্লাই এই বাড়ির নাম ‘রানি কুঠি।’
অন্যদিকে ইডি অভিযান ঘিরেই এদিন তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায়। শেখ শাহজাহানের বাড়িতে প্রবেশ করতে গেলে বাধার মুখে পড়তে হয় আধিকারিকদের। মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় এক ইডি আধিকারিকের। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়িতে চলে ভাঙচুর। এরপরই নজরে আসে সল্টলেকে সিআরপিএফ-এর অফিস থেকে বাড়তি বাহিনী বেরচ্ছে। এই বাড়তি বাহিনীতে রয়েছেন ২০ জন জওয়ান। এদিকে মধ্যমগ্রাম থেকেও এক সেকশন বাহিনী আসছে। জানা যায়, প্রথমে আক্রান্তদের কাছে পৌঁছবে এই বাহিনী। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সরবেড়িয়া যাবেন কি না।