রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার আর্জি ইডির

রেশন দুর্নীতির তদন্তের ভার সিবিআইকে দেওয়ার আবেদন নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হল অপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি বা এনফোর্সমেন্টডিরেক্টরেট। রেশন দুর্নীতির ফৌজদারি মামলাগুলি সিবিআইকে দিয়ে তদন্তের দাবি করে এবার মামলা করল ইডি। আদালত সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ছ’টি এফআইআর-এর পাঁচটিতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। আর একটির চূড়ান্ত রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ। এদিকে রাজ্যে এর বাইরে কোনও এফআইআর হয়ে থাকলে তা রাজ্যকে জানাতে নির্দেশ দেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এছাড়াও এরই প্রেক্ষিতে বালিগঞ্জ থানায় রেশন দুর্নীতির বিচার প্রক্রিয়ায় আপাতত স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি সেনগুপ্ত। পাশাপাশি তিনি ছ’টি এফআইএর-এর কেস ডায়েরিও তলব করেন। একইসঙ্গে বিচারপতি এও নির্দেশ দেন পরবর্তী শুনানির দিন, অর্থাৎ ৫ মার্চ এই কেস ডায়েরি পেশ করার। বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এদিন স্পষ্টতই জানান, রেশন দুর্নীতি তদন্তে প্রয়োজনে নতুন করে তদন্ত হবে। যে তদন্ত গুলি এখনও চলছে সেগুলিতে হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়া চার্জশিট দেওয়া যাবে না।

এদিন আদালতে ইডি জানায়, রেশন দুর্নীতি কাণ্ডে মোট ২ হাজার কোটি টাকা দুবাই পাচার হয়েছে সীমান্ত দিয়ে। ইতিমধ্যে রাজ্যের শাসক দলের কয়েকজন প্রভাবশালীকে ইডি গ্রেফতার করেছে। বিচারপতি এদিন জানতে চান, কতগুলি তদন্ত বাকি আছে সে ব্যাপারে। এক্ষেত্রে জানানো হয়, মোট ৬ টা এফআইআর হয়েছে। ইডি জানায়, গত বছর ১১ ডিসেম্বর চিঠি লিখে পুলিশের কাছে কোন মামলার কী অবস্থা সেটা জানতে চাওয়া হয়। আমরা নতুন করে তদন্ত চাই সিবিআইকে দিয়ে। ইডি আদালতে জানায়, রেশন দুর্নীতি বিষয়ক যে মামলাগুলি রাজ্য পুলিশের তদন্তাধীন ছিল, তা যেন সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

তবে ইডির এই দাবির বিরোধিতা করে রাজ্য। রাজ্য জানায়, ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে এফআরটি দিয়ে। একটা এজেন্সি চাইছে অন্য একটা এজেন্সি তদন্ত করুক, এটা হয় না। বিচারপতি জানান, অভিযুক্ত কোনওদিন তদন্ত সংস্থা বাছতে পারে না। এজেন্সি নিয়ে এটা খাটে না। ইডি জানতে চায়, রাজ্য জানাক, কোন কোন মামলা কী অবস্থায় আছে। উত্তরে রাজ্য জানায়, রেশন দুর্নীতি নিয়ে মোট ৫ টি মামলায় চার্জশিট হয়েছে। একটায় ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে পুলিশ। রাজ্য হলফনামা দিতে চায়।

এদিকে শুধুমাত্র বালিগঞ্জ থানায় ২০১৯ সালে দায়ের হওয়া এফআইআর-এর ভিত্তিতে নিম্ন আদালতের বিচারপ্রক্রিয়ার ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় আদালত। যদি এই মামলায় পুলিশের তদন্ত এখনও সচল থাকে তাহলে তার ওপরও বহাল থাকবে স্থগিতাদেশ সোমবার এমনও জানায়  আদালত। এদিকে রেশন দুর্নীতিতে ৬ এফআইআর হয়েছে এই রাজ্যে। এই ৬ এফআইআরকে  ধরে আর্থিক অপরাধ তদন্ত শুরু করে ইডি। এর মধ্যে রয়েছে কলকাতার দুই এবং নদিয়ার চারটি এফআইআর । রাজ্যের তদন্ত সঠিক হয়নি ৬ এফআইআর-এ, অভিযোগ ইডি’র। এর ভিত্তিতে আদালত জানায়, এই মুহূর্তে সার্বিক ভাবে কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেওয়ার সুযোগ নেই। সোমবার এই প্রসঙ্গে রেশন দুর্নীতির বেশিরভাগ তদন্ত রাজ্য পুলিশ শেষ করেছে, পুলিশ চার্জশিট পেশ করেছে, চূড়ান্ত রিপোর্ট দিয়েছে, আদালতে জানান রাজ্যের আইনজীবী অমিতেশ বন্দোপাধ্যায়। পাল্টা আদালত জানায়, তাহলে আরও তদন্ত করার সুযোগ রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + one =