‘যথেষ্ট হয়েছে’, আরজি কর কাণ্ডে ক্ষুব্ধ রাষ্ট্রপতি

আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় অবশেষে মুখ খুললেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। স্পষ্টতই হতাশা এবং আতঙ্ক ব্যক্ত করে রাষ্ট্রপতির কড়া বার্তা, ‘যথেষ্ট হয়েছে।’ এই ধরনের ঘৃণ্য অপরাধ প্রতিরোধ করতে দ্রুত সামাজিক পরিবর্তনের পক্ষে সওয়াল করেন তিনি। প্রসঙ্গত, আরজি কর-কাণ্ডে একদিকে যখন সারা রাজ্য উত্তাল, প্রতিবাদে সোচ্চার সব মহল, আন্দোলন চলছে বিভিন্ন হাসপাতালে, বিচারের দাবিতে পথে নেমেছে রাজ্যের মানুষ, এমনকী রাষ্ট্রপতিকে চিঠিও পাঠানো হয় আম জনতার তরফ থেকে। কলকাতার তরুণী ডাক্তারের এই মর্মান্তিক ঘটনায় ভীত-স্বন্ত্রস্ত রাষ্ট্রপতি।

এখানেই শেষ নয়, এদিন নারীদের সঙ্গে হওয়া অপরাধের বিরুদ্ধে রেড-ফ্ল্যাগ জারি করেন তিনি। পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাত্‍কারে দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, ‘কোনও সভ্য সমাজে কন্যা ও বোনেরা এই ধরনের নৃশংসতার শিকার হতে দিতে পারে না। যথেষ্ট হয়েছে।’ এমনকী মানুষের যৌথ স্মৃতিভ্রংশের সমালোচনাও করেন তিনি। যা নারীদের প্রতি নির্যাতন ও হয়রানিকে প্রচ্ছন্ন মদত দেয়। রাষ্ট্রপতির কথায়, নির্ভয়া কাণ্ডের পর ১২ বছরে প্রায় অগণিত ধর্ষণের ঘটনা অবহেলার চোখে দেখেছে। এই যৌথ স্মৃতিবিভ্রান্তি জঘন্য।

আরজি কর ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি এও বলেন, ‘শুধুমাত্র ইতিহাসের মুখোমুখি হতে ভীত সমাজই যৌথ স্মৃতিভ্রংশকে অবলম্বন করে। দেশকে অবশ্যই ইতিহাসের মুখোমুখি হতে হবে। আমাদের এই বিকৃতির সঙ্গে ব্যাপকভাবে মোকাবিলা করতে হবে। মূলেই ধ্বংস করে ফেলতে হবে।’ কেবল আরজি কর নয়, উত্তরাখণ্ড এবং মহারাষ্ট্রে নার্সদের ধর্ষণ-সহ মহিলাদের বিরুদ্ধে সহিংস অপরাধের অন্যান্য সাম্প্রতিক ভয়ঙ্কর ঘটনাগুলি নিয়েও এদিন সরব হন রাষ্ট্রপতি।

মলায়ালম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনেতা ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগগুলিরও সমালোচনা করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, ছাত্র, ডাক্তার এবং সাধারণ মানুষ কলকাতায় ঘটে যাওয়া ঘৃণ্য অপরাধের প্রতিবাদ করলেও, অপরাধীরা বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

বুধবার আরজি কর কাণ্ডের পর এই প্রথম মুখ খুললেন রাষ্ট্রপতি মুর্মু। এ নিয়ে হয়ে চলা প্রতিবাদকে সমর্থন করে দ্রুত ন্যায়বিচারের দাবিও জানান তিনি। নারীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো এবং সর্বক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা ও সম্মান সুনিশ্চিত করার বার্তা দেন রাষ্ট্রপতি। একইসঙ্গে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এও জানান, সাম্প্রতিক অপরাধের পর কলকাতায় প্রতিবাদ করছেন পড়ুয়া, চিকিৎসক, নাগরিকরা, কিন্তু অন্য জায়গায় অবাধে বিচরণ করছে অপরাধীরা। রাষ্ট্রপতি জোর দিয়ে বলেন, কোনও সভ্য সমাজ তাদের মেয়ে এবং বোনেদের এই রকম অত্যাচারের শিকার হতে দিতে পারে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven + twelve =