অন্তরের উদ্য়োগই দুর্গা আরাধনার মূলমন্ত্র, প্রতিফলিত ভবনীপুর অবসরের থিমে

দুর্গাপুজোতে মাতেন বাঙালির সব্বাই-ই। পুজোর আয়োজনের ক্ষেত্রেও প্রকারভেদন রয়েছে পুজো শুরুর প্রথম থেকেই। এখন এই পার্থক্য বড় চোখে পড়ার মতো। তবে দেবী দুর্গা তো জগজ্জননী। সবার কাছেই তিনি সমান। তবে এই পুজোর যাঁরা আয়োজন করে থাকেন তাঁদের একদলের হাতে রয়েছে বিপুল সম্পদ। এঁদের পুজোয় দেখা যায় প্রাচুর্যের ছড়াছড়ি। আর একদলের হাতে সে রকম অর্থ না থাকলেও  নিজেদের ক্ষমতার মধ্যেই দেবী দুর্গার পুজোর ব্যবস্থা করেন। কারণ এঁদের কাছে দেবী দুর্গা হয় মা, নয়তো ঘরের মেয়ে। তাই বছরের এই চারটে দিনে নিজেদের ক্ষমতার বাইরে গিয়েও এই পুজোর আয়োজন তাঁরা করে থাকেন। এই রকমই এক থিমকে তাঁদের পুজোয় তুলে ধরতে চেয়েছে ভবানীপুর অবসর।

থিমের নামকরণ সেখানে করা হয়েছে ‘মহল্লা’। যেখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ভারতের পশ্চিম প্রান্তের এক কল্পিত জনপদ। তারই এক অচেনা-অজানা পল্লিতে হচ্ছে মায়ের আরাধনা। সেখানকার বাসিন্দাদের হাতে অর্থের প্রাচুর্য নেই, তবে রয়েছে ভক্তি। আর এই ভক্তির থেকেই তৈরি হয়েছে মায়ের আরাধনা করার ঐকান্তিক আগ্রহ এবং মানসিক শক্তি। এই ভক্তি আর মানসিক শক্তির সংমিশ্রণে কী করে অতি সাধারণেরাও দুর্গাপুজো করে থাকেন, তারই এক বাস্তব রূপ ধরা পড়েছে এই মহল্লা থিমে। আর এই থিমকে বাস্তব রূপ দিতে মণ্ডপ তৈরি হয়েছে কাঠের বাটাম দিয়ে। তবে এমনই এক মণ্ডপকে ঠিক যেমন করে অতি সাধারণ উদ্য়োক্তারাও মানুষের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলেন, সেই পথেই হেঁটেছেন থিম শিল্পী প্রশান্ত পালও। বাটাম দিয়ে তৈরি মণ্ডপে ফুটে উঠেছে নজর কাড়া হাতের কাজ আর রঙিন চিত্রকলা। কারণ, যেখানে পুজোর উদ্যোক্তাদের হাতে সে অর্থে টাকা নেই, সেখানে চোখ ধাঁধানো জৌলুস দেখানো সম্ভব নয়। তবে যেটা সম্ভব তা হল নিজের ক্ষমতার মধ্যে ওই মণ্ডপকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার জন্য নিজেদের শিল্প ভাবনাকে কাজে লাগানো। ২০২৪-এর ভবানীপুর অবসর-এর পুজো মণ্ডপে এলে দর্শনার্থীরা অনুভব করবেন বড় পুজো হয়তো তাদের চোখ ধাঁধানো জৌলুস দিয়ে সবাইকে টানে কিন্তু ছোট পুজোর উদ্যোক্তাদের তরফ থেকেও মায়ের আরাধনায় থাকে না কোনও খামতি। আর এই ভাবেই তাঁরা পুজোর কটা দিন তাঁদের পুজো মণ্ডপকে রূপ দেন এক মায়া নগরীর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − twelve =