মাদকাসক্তদের অন্ধকার থেকে আলোর পথে ফেরাতে নয়া পরিকল্পনা নিয়েছে কারা দফতর। মাদকাসক্তদের জীবনের মূলস্রোতে ফেরানোর জন্য ‘বিবর্তন’ নামে একটি কর্মসূচি চালু করা হচ্ছে রাজ্যে। নেশা ছাড়ানোর জন্য চিকিৎসার সঙ্গেই মাদকাসক্ত বন্দিদের যোগা ট্রেনিং, নাচ-গান-আবৃত্তি শেখানোর পাশাপাশি দেওয়া হবে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণও।
পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে শুরু হয়েছে এই কর্মসূচিটি। যেখানে মাদকাসক্ত বন্দিদের চিকিৎসা চলবে। সেই সঙ্গে সকালের দিকে যোগার ক্লাস নেবেন বিশেষজ্ঞরা। এর বাইরেও নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা হবে এই বন্দিদের। শেখানো হবে নাচ-গান-আবৃত্তি। মূলত বিকেলের দিকে নিয়মিত খেলাধুলোয় সামিল করা হবে এই বন্দিদের। সেই সঙ্গে চলবে কাউন্সেলিংও।
এই কর্মসূচি সম্পর্কে কারা দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এর মাধ্যমে সংশোধনাগারে থাকা মাদকাসক্ত বন্দিদের নেশা ছাড়ানো হবে। মাদক পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট বন্দি যাতে জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করতে পারেন, সেজন্য তাঁদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে কারা দফতর সূত্রে এও জানানো হয়েছে যে, মাদকাসক্ত বন্দিদের জন্য ১৫ শয্যার একটি মিনি হাসপাতালও তৈরি করা হয়েছে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে।
এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে কারামন্ত্রী অখিল গিরির বক্তব্য, ‘মাদকাসক্ত বন্দিরা যাতে নতুন জীবন শুরু করতে পারেন, সেজন্যই এই কর্মসূচি। এর ফলে অনেক বন্দি নতুন জীবন শুরু করতে পারবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।’
এর পাশাপাশি কারা দফতরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে সংশোধনাগারে যাতে কোনও ভাবেই মাদক ঢুকতে না পারে, সে দিকে নজর দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছেন তাঁরা।
এই মাদকাসক্তদের সম্পর্কে কারা দফতরের কর্তারা এও জানিয়েছেন, এমন অনেক বন্দিকে তাঁরা দেখেছেন, যাঁরা মাদক না পেয়ে সংশোধনাগারে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। আবার পরে নেশা কেটে যাওয়ার পরে অকপটে নিজের ভুলও স্বীকার করেছেন। প্রথম ধাপে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে শুরু হলেও কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্যের আরও চারটি জেলায় এই কর্মসূচি শুরু হবে। এই তালিকায় রয়েছে, বর্ধমান, দমদম, আলিপুর এবং মেদিনীপুর সংশোধনাগার।