আদালত অবমাননার মামলায় কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ। বিচারপতির ছবি পা দিয়ে মাড়ানো হয়েছে। এমন ছবি দেখে চরম ক্ষুব্ধ হাইকোর্টের তিন বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ। প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের চেম্বারের বাইরে কিছুদিন আগে বিক্ষোভ দেখান উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। সেই বিক্ষোভে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এবার সামনে এল নতুন অভিযোগ।
এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর ছবির উপর পা তুলে প্রতিবাদ করা হল কীভাবে তা নিযে তীব্র সমালোচনা করে হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা ছবিতে দেখলাম আপনারা বিচারপতির ছবি মাড়িয়ে দিচ্ছেন। এরপরই প্রশ্ন তোলা হয়, বিচারপতির ছবি বিক্ষোভে রাখার অর্থ কী তা নিয়ে। সঙ্গে এও বলা হয়, ওঁকে নিশ্চই সম্মান জানাচ্ছিলেন না? জবাবে আইনজীবী বলেন, ‘উনি দাঁড়িয়ে ছিলেন। পা মাড়াননি।’
বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এরপর এ প্রশ্নও তোলেন, ‘হতাশা হলেই এই আচরণ কি গ্রহণযোগ্য? প্রতিটি ক্ষেত্রে হতাশার জন্য এটা করা যেতে পারে? বিচারপতিকে শাসাচ্ছেন?’ এদিন আইনজীবীকে কার্যত ভর্ৎসনার সুরে বিচারপতি ভট্টাচার্য বলেন, ‘কীভাবে ডিফেন্ড করছেন বুঝলাম না। ছবি কি রাস্তায় উড়ে এল? আর উনি দাঁড়িয়ে রইলেন? বিচারপতির বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত কোনও আক্রোশ নেই। শুধু ওই মামলার জন্য এই আচরণ?’এরই রেশ ধরে তিনি জানান, ‘সব মামলায় ক্ষমা চাইলেই সমাধান হয় না। পানের দোকানেও বিচারপতির সমালোচনা হয়। আমরা এসব ভাবি না। কিন্তু এটা কী ধরণের আচরণ?’
এদিন কুণাল ঘোষের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কলকাতা হাইকোর্টের এই সংস্কৃতি ছিল না। রিকশার পিছনে বিচারপতির ছবি! একজন বিচারপতি সব ছেড়ে রাজনীতিতে যুক্ত হলেন। এটা কি আমাদের সংস্কৃতি ছিল? ডিগনিটির প্রশ্ন যখন উঠছে, তখন সবার কথাই বলা দরকার। যে সব আইনজীবী ওই দিন ছিলেন, তাঁরা রাজনৈতিক দলের সমর্থক। তাঁরা শুধু আইনজীবী ছিলেন না।’
প্রসঙ্গত, এই মামলায় কুণাল সহ বাকি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বর্তমানে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বৃহত্তর বেঞ্চে চলছে সেই মামলার শুনানি।