রেশন দুর্নীতিতে গ্রেফতার বনগাঁর তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যকে আদালতে পেশ করে ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতের জন্য আবেদন জানায় ইডি। রেশন দুর্নীতি সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তে এবার আদালতে চাঞ্চল্যকর দাবি ইডির তরফে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে আইনজীবী দাবি করেন, রেশনে ১০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। তার মধ্যে ২৭০০ কোটি টাকা পাচার হয়েছিল দুবাইয়ে। ইডির তরফে আরও দাবি করা হয়, শঙ্কর আঢ্যর সংস্থার মাধ্যমেই টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছিল। এদিকে বিদেশি মুদ্রা বিনিময় অপরাধ নয় বলেই পালটা সওয়াল বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানের আইনজীবীর। বিদেশি মুদ্রা বিনিময় ক্ষেত্রে বেনিয়ম হলে তা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মারফত আসবে। ইডি কেন গ্রেপ্তার করল তাঁর শংকর আঢ্যকে তা নিয়ে পালটা সওয়াল করেন আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, ১৬ ঘণ্টা ম্যারাথন তল্লাশির পর শুক্রবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার হন শংকর আঢ্য। শনিবার তাঁকে ব্যাংকশাল আদালতে তোলা হয়। শনিবার আদালতে রেশন দুর্নীতিতে ধৃত মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়র লেখা চিঠির কথাও উল্লেখ করে ইডি। তদন্তকারীরা জানান, হাসপাতালে বসে মেয়েকে একটি চিঠি পাঠান জ্যোতিপ্রিয়। সেটি সিআরপিএফ হাতে পড়ে। পরিস্থিতি এমন হয় যে সিআরপিএফ চিঠিটি খুলে দেখতে বাধ্য হন। সেই চিঠিতে নাম ছিল শংকর আঢ্য, শেখ শাহজাহান, রবীন্দ্র এবং ডাকুর নামে চারজনের। ওই চিঠিই তদন্তে নয়া মোড় দেয়। এর পর তল্লাশির পর শংকর আঢ্যকে গ্রেপ্তার করে ইডি।এর পাশাপাশি ইডির আইনজীবী এদিন নগর দায়রা আদালতে বলেন, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির (শঙ্কর আঢ্য) অনেক এজেন্সি আছে। সেই এজেন্সিগুলির মাধ্যমেই বৈদেশিক মুদ্রার এক্সচেঞ্জ করা হয়। ইডি জানায়, বাংলায় এমন মোট ১৯টি বৈদেশিক মুদ্রার এক্সচেঞ্জের ব্যবসা রয়েছে অভিযুক্তর। যার মধ্যে সবগুলিই সীমান্তবর্তী এলাকাতেই বলে দাবি ইডির। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আরও চাঞ্চল্যকর দাবি হল, এগুলির মাধ্যমে মোট ২০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। যার মধ্যে ৯-১০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি রেশনে বলে সন্দেহ ইডির। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে এদিন আদালতে যে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির হিসেব দেখানো হয়, তা শুনে অবাক বিচারকও। তিনি বলেন, ‘এটার পর কি বলা যায় এই রাজ্য গরিব!’ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে এদিন আদালতে আরও জানানো হয়, বিগত প্রায় এক দশক ধরে এই কারবার চলছে। সীমান্ত এলাকায় একটি র্যাকেট চলছে বলেও আদালতে জানান ইডির আইনজীবী। কেন্দ্রীয় তদন্তকারীর বিস্ফোরক দাবির পরেও জামিনের আবেদন জানান শংকর আঢ্যর আইনজীবী জাকির হোসেন।