দুধ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভাল সবসময় দুধ খাওয়া ঠিক নয় এমনটাই কি্তুজানাচ্ছেন আধুনিক পুষ্টিবিদরা। শিশুদের জন্মের পর থেকে অন্তত ছয় মাস শুধু মাতৃদুগ্ধ পান করাই সবচেয়ে ভাল। তারপর গরু বা মহিষের দুধের সঙ্গে শিশুকে কিছু হালকা জিনিসও খাওয়ানো হয় যাতে সে বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি পায়।
তবে ভারতে দুধ নিয়ে ভিন্ন চিন্তাভাবনা রয়েছে। কিছু অংশে বাবা-মা তার শিশুকে অন্য কিছু খাওয়ানোর পরিবর্তে প্রায় ২ থেকে ৩ বছরের জন্য একভাবে বুকের দুধ পান করান। যেখানে কিছু লোক পুষ্টির জন্য দুধকে প্রয়োজনীয় মনে করে না বা আর্থিক কারণে শিশুদের দুধ খাওয়াতে অক্ষম।
ফলে দুধ ঠিক কোন বয়সে কী পরিমাণে খাওযাতে হবে সেটা জানা অত্যন্ত জরুরি। এই প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদরা জানাচ্ছেন, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ দ্বারা নবজাতকদের বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য নির্দেশিকা রয়েছে৷ যাতে বলা হয়, নবজাতক শিশুকে অন্তত ছয় মাস শুধু মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। ৬ মাস থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের জন্য আইসিএমআর দ্বারা দুধের ন্যূনতম পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। শিশু যদি দুধ না পান করে তবে তাকে একই পরিমাণ দুধ দিয়ে তৈরি দই বা পনির খাওয়ানো যেতে পারে।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, দুধ প্রোটিন এবং ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টির ভাণ্ডার। এতে ভিটামিন বি১২, রিবোফ্লাভিন, ভিটামিন ডি, ম্যাগনেসিয়াম, আয়োডিন, খনিজ পদার্থ, চর্বি ও ফসফরাস পাওয়া যায়। যা বাচ্চাদের হাড় শক্তিশালী করে। দুধে উপস্থিত প্রোটিন উচ্চতা বাড়াতে দারুণ কার্যকরী।
আইসিএমআর-এর নির্দেশিকা অনুসারে, ১ বছর থেকে ১৮ বছরের মধ্যে কিশোর-কিশোরীদের জন্য দুধের ন্যূনতম পরিমাণ ৫০০মিলি লিটার। যদি শিশুর কোনও ধরনের সমস্যা না থাকে, তাহলে এক বছরের বেশি বয়সী শিশুকে প্রতিদিন কমপক্ষে ২ থেকে ৩ কাপ দুধ পান করাতে পারেন। এর সঙ্গে শস্য, ফল, ডাল, শাক সবজি ইত্যাদিও খাওয়াতে হবে।
তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাবার এবং দুধ খাওয়ার পরিমাণও বাড়ানো যেতে পারে। ১০ বছর বয়সের মধ্যে শারীরিক বিকাশ বেশি হয়, এমন পরিস্থিতিতে কৈশোরে পা রাখা শিশুদের ৫০০ মিলিলিটারের বেশি দুধ পান করা যেতে পারে।
শিশু যদি ৫০০ মিলিলিটার বেশি দুধ পান করে তবে তার জন্য কোনও ক্ষতি নেই। আইসিএমআর নির্দেশিকা অর্থনৈতিক কারণ বা প্রাপ্যতার কথা মাথায় রেখে কমপক্ষে ৫০০ মিলি দুধকে প্রয়োজনীয় হিসাবে বিবেচনা করে। তবে শিশুরা দুধ থেকে সম্পূর্ণ পুষ্টি পায় না। তাই খাবারে খাদ্যশস্য, ডাল, শাকসবজি, ফলমূল, ড্রাই ফ্রুট রাখা অত্যন্ত জরুরি।