মেছুয়া বাজার এলাকার ঋতুরাজ হোটেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৪।
কলকাতার জোড়াসাঁকো থানার অন্তর্গত ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত এই হোটেলে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে হঠাৎ আগুন লেগে যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।
আচমকা আগুনে হোটেলের ভিতরে আটকে পড়েন বহু আবাসিক। আতঙ্কিত মানুষজন মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বেলে জানলার পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন যাতে দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করা যায়। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন। জানা গিয়েছে, উদ্ধারকাজে হাত লাগান স্থানীয় বাসিন্দারা। ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের কয়েকজন এবং দমকলের কয়েকজন কর্মী হোটেলের ভেতরে ঢোকেন। প্রাথমিকভাবে মই ব্যবহার করে তিনতলা পর্যন্ত উঠে উদ্ধারকাজ শুরু করেন দমকলকর্মীরা। এদিকে হোটেলের বিভিন্ন দিক থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। এরই মাঝে আগুনের হাত থেকে বাঁচার জন্য হোটেলের ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামতে গিয়ে সোজা আছড়ে পড়েন মাটিতে। এরপর দ্রুত তাঁকে মেডিক্য়াল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনায় এই মৃত ব্যক্তির নাম সঞ্জয় পাসওয়ান।
এরপর মধ্য়রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে ঘরের ভিতরে তল্লাশিতে ঢোকেন দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। তখনই বিভিন্ন ঘর থেকে আরও ১৩টি অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। রাত ৩.১৫ নাগাদ নগরপাল মনোজ ভার্মা এমনটা জানান। আর কোনও দেহ হোটেলের ভিতরে আটকে রয়েছে কিনা তা খোঁজ করে দেখা হচ্ছে। এরই মাঝে হোটেল থেকে মোট ২২ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫ জন ছিলেন হোটেলের ছাদে৷ সাত জনকে হোটেলের বিভিন্ন ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়৷ পাশাপাশি দমকলের তরফ থেকে এও জানানো হয়, দোতলা থেকেই আগুন ছড়ায় এই বহুতল হোটেলটিতে। সূত্রে এ খবরও মিলছে, হোটেলে তিন থেকে ছতলা পর্যন্ত আবাসিকদের থাকার ঘর ছিল৷ দোতলায় ছিল রেস্তোরাঁ৷ অগ্নিকাণ্ডের সময় হোটেলের বহু ঘরেই আবাসিকরা ছিলেন৷ তাঁদের মধ্যে ভিনরাজ্যের বাসিন্দারাও ছিলেন৷ দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে৷
২০১০ সালে পার্ক স্ট্রিটে স্টিফেন কোর্ট এবং ২০১১ সালে ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর শহরে বড় একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও একসঙ্গে এত প্রাণহানি ঘটেনি৷