‘বাংলা মাকে রক্ষা করার লড়াই একুশে জুলাই’: মমতা

প্রতি বছরই ২১ জুলাইয়ের আগের বিকালে ধর্মতলায় সমাবেশস্থলে যান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। শনিবার সন্ধ্যায় ৬টা নাগাদ তিনি পৌঁছন ধর্মতলায়। বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের দিকে মূল মঞ্চের পিছনে ভিভিআইপি এন্ট্রি পয়েন্ট ঘুরে দেখেন তিনি। সভামঞ্চ সংলগ্ন আসনে নিজে বসে প্রস্তুতির সমস্ত খুঁটিনাটি সম্পর্কে তথ্য গ্রহণ করেন। তাঁর সঙ্গে এদিন দেখা যায় মেয়র ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাস, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র, দেবাশিস কুমার, সাংসদ সায়নী ঘোষ, মালা রায়, সুব্রত বক্সিকে।

এবারের ২১ জুলাইয়ের সভামঞ্চ রাজ্য রাজনীতির জন্য তো বটেই জাতীয় রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতেও বড় বার্তার মঞ্চ হতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখনও অবধি যা খবর, সমাজবাদী পার্টি নেতা অখিলেশ যাদব থাকতে পারেন রবিবার ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে। ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম এই শরিক দলের প্রধানকে স্বাগত জানাতে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সেই সমস্ত প্রস্তুতির হালহকিকত সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমাবেশের আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে। পেন, চিরকুট নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিখে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে বারবারই বলা হচ্ছে, এনডিএ সরকার এবার আর গতবারের মতো শক্তিশালী নয়। তৃণমূলের দাবি, ইন্ডিয়া জোট ছবিটা ঘুরিয়ে দিতে পারে। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে অখিলেশ যাদব ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে কোনও বার্তা দেন কি না নজর থাকছে সেদিকেও।

পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘২১ জুলাই এবং বিভিন্ন গণ আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছিলেন তাঁদের স্মরণ করার জন্যই এই সমাবেশ। মা-মাটি-মানুষ দিবস হিসেবে পালন করার জন্য এই দিনটিকেই আমরা বেছে নিই। দূর দূর থেকে হেঁটে এই সমাবেশে যোগ দিতে আসেন কর্মী-সমর্থকরা। শান্তিপূর্ণভাবে, মাথা ঠান্ডা রেখে এই সমাবেশে যোগ দেবেন। বাসের চালক যেন গাড়ি ধীরে চালান। যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, সেদিকে পুলিশকে নজর রাখতে অনুরোধ জানাচ্ছি। ট্রেন যাতে বাতিল বা বন্ধ না হয় তার জন্য আমরা ১৫ দিন আগেই অনুরোধ করেছিলাম। কেউ যেন সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য কোনও ঝুঁকি না নেন।’ এর পাশাপাশি তৃণমূল সুপ্রিমো স্বয়ং জানান, ‘আবহাওয়া ঠিক থাকলে অখিলেশ আসবে। আমি ওঁকে অনুরোধ জানিয়েছি। এটা কেবল রাজনৈতিক সমাবেশ নয়, বাংলার অস্তিত্ব রক্ষার সভা। নির্বাচনে আমাদের সমর্থন করার জন্য বাংলার মা-মাটি-মানুষ সহ দেশের সকল নাগরিককে প্রণাম জানাচ্ছি, বাকি বক্তব্য কাল জানাব।’

এদিন সমাবেশস্থলে দলের একাধিক নেতা ছিলেন। ছিলেন তরুণ মুখ থেকে জেলার প্রবীণ নেতারাও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে দেখা যায় দেবাংশু ভট্টাচার্যকে। আইটি সেলকে আরও সক্রিয় হতে বলেন দলের সুপ্রিমো। মমতা দেবাংশুকে বলেন, ‘তুই ভাল লড়েছিস। সব দখল হয়ে গিয়েছিল। ছাব্বিশে এর শোধ তুলতে হবে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × 5 =