অবশেষে আরজি কর হাসপাতালে তরুণী ডাক্তারকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় বিবৃতি দিলেন বাংলার বিদ্বজ্জন মহলের একাংশ। এই নারকীয় ঘটনার পর থেকে অনেক বিদ্বজ্জন, যাঁদের মধ্যে অধিকাংশই এখনও এই কাণ্ডে প্রত্যক্ষ ভাবে ততটা প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন না বলে অভিযোগ নেটিজেনদের। আন্দোলনকারীদের কথাতেও বারবার উঠে এসেছে এই বিদ্বজ্জনদের ভূমিকা। এরকমই কয়েক জন বিদ্বজ্জনের নাম সম্বলিত প্রেসবিবৃতি জারি করা হয়েছে মঙ্গলবার। এই বিবৃতির নীচে নাম আছে প্রতুল মুখোপাধ্যায়, কবীর সুমন, গৌতম ঘোষ, জয় গোস্বামী, আবুল বাশার, সুবোধ সরকার, পরঞ্জয় গুহঠাকুরতা, অভিরূপ সরকার–সহ বহু বিদ্বজ্জনের৷
বিদ্বজ্জনদের এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে গত ৯ অগাস্ট মহিলা চিকিৎসকের উপর যে অবর্ণনীয় নির্যাতন, ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, তাতে ঘৃণা জানানোর ভাষা নেই৷ রাজ্যবাসী হিসেবে আমরা লজ্জিত।’ বিবৃতিতে সিবিআই–এর কাছে আবদন জানানো হয়েছে দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে বিচার প্রক্রিয়ায় শাস্তিদানের জন্য৷ তাঁদের বিবৃতিতে উঠে এসেছে কলকাতার সাম্প্রতিক পরিস্থিতিও৷ বিদ্বজ্জনদের কথায়, ভালবাসার শহর আজ গভীর অসুখে৷ তাই তাঁদের মন ভাল নেই৷ বাকি রাজ্যবাসীর সঙ্গে তাঁরাও সাগ্রহে অপেক্ষা করছেন বিচারের জন্য৷ এই প্রসঙ্গে বিরোধী রাজনৈতিক দলদের প্রসঙ্গও এসেছে৷ বিবৃতিতে আক্ষেপ, এই সময়ে কিছু সুযোগসন্ধানী রাজনৈতিক দল লাগাতার গুজব ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করতে চাইছে৷ এই দলগুলি বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করতে চাইছে বলে অভিযোগ এই বিদ্বজ্জনদের৷ বিরোধী দলের ছায়ায় যে কোনও আন্দোলন থেকে কার্যত বিরত থাকতে রাজ্যবাসীর কাছে আর্জি জানানো হয়েছে এই বিবৃতিতে৷ বরং বিদ্বজ্জনরা বিশ্বাসী, যে সুবিচার আসবেই৷
কর্মক্ষেত্রে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ও স্থায়ী সুরক্ষার বন্দোবস্ত করার আবেদনও রেখেছেন বিদ্বজ্জনরা। পাশাপাশি আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে তাঁদের অনুরোধ, কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেই তাঁরা যেন প্রতিবাদ চালিয়ে নিয়ে যান৷ রয়েছে প্রশাসনের প্রতি সতর্কবাণীও৷ বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘আশা রাখি প্রশাসন এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবে৷ আগামীতে যে কোন ঘৃণ্য অপরাধ রুখতে সজাগ, তৎপর হবে৷’সামগ্রিক পরিস্থিতিতে সমাজমাধ্যমের ভূমিকাও অনুল্লেখিত থাকেনি এই বিবৃতিতে৷ আজকের দিনে সামাজিক মাধ্যমের ভূমিকা স্বীকার করেও বলা হয়েছে, ‘‘সামাজিক ও সংবাদ মাধ্যমে পরের পর অজস্র গুজব, বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ঘটনা পরম্পরা এবং তদন্ত প্রক্রিয়াকে রসালো পণ্যে পরিণত করা হচ্ছে৷’’ বাংলার আপামর শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের কাছে তাঁরা আবেদন রেখেছেন এই প্রচেষ্টা রুখে দেওয়ার৷