অবশেষে স্বস্তি, শর্মিষ্ঠার অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন মঞ্জুর 

ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল শর্মিষ্ঠা পানোলিকে। এবার সেই ঘটনায় শর্মিষ্ঠার অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন মঞ্জুর করলেন বিচারপতি রাজ বসু চৌধুরী। পাশাপাশি পুলিশকে নির্দেশ তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার। দশ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। তবে দেওয়া হয়েছে একাধিক শর্ত। তদন্তকারী অফিসারকে সাহায্য করতে হবে শর্মিষ্ঠাকে। দেশের বাইরে যেতে পারবেন না তিনি। বিদেশে যেতে হলে সিজেএম আদালতের অনুমতি নিতে হবে।
এদিন শুনানির সময় শর্মিষ্ঠার আইনজীবী জানান, আমরা এফআইআর খারিজ করার আবেদন করতে চাই। উত্তরে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান,আমরা আদালতের নির্দেশ মেনে কেস ডায়েরি সঙ্গে এনেছি। অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য বিক্ষোভ হয়েছে। সেই ছবি রয়েছে কেস ডায়েরিতে। রেগুলার বেঞ্চে পাঠানো হোক এই মামলা। এরপর বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরী জানান, রেগুলার বেঞ্চে আদেশ রয়েছে বৃহস্পতিবারই মামলা শোনার। প্রত্যুত্তরে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান,তদন্ত শুরু করে পুলিশ গিয়েছিল শর্মিষ্ঠার বাড়িতে। কিন্তু পাওয়া যায়নি। এদিকে ১৯ তারিখ রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাত বারোটা বেজে পাঁচ মিনিটের বিমানে চড়ে কলকাতা থেকে দিল্লি উড়ে যান শর্মিষ্ঠা। তারপর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপরই বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরী গ্রেফতারের গ্রাউন্ড সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। জানতে চান শুধুই অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট কি না সে ব্যাপারেও। সঙ্গে অ্যাডভোকেট জেনারেলকে এ প্রশ্নও করেন, তারা একটি ল্যাপটপ ও একটি আইফোন বাজেয়াপ্ত করেছেন কি না সে ব্যাপারেও। এরপরই বিচারপতির প্রশ্ন, আর কোনও বিশদ তদন্তের প্রয়োজন আছে কি না সে ব্য়াপারেও। পাশাপাশি বিচারপতি এও জানান, আদালত সব জানে। কিন্তু অভিযুক্তরও জানা উচিত তাঁকে কোন গ্রাউন্ডে গ্রেফতার করা হল। এখানেই শেষ নয়, এরপর বিচারপতি অ্যাডভোকেট জেনারেলকে এও বলেন, ‘আপনারা মামলা করেছেন। দু’বার নোটিস দিয়েছেন। তারপর কোর্টে আবেদন করেছেন ওয়ারেন্টের জন্য। তবে ওয়ারেন্টে গ্রেফতারের গ্রাউন্ড উল্লেখ থাকে না।’
এই প্রসঙ্গে শর্মিষ্ঠার আইনজীবী আদালতে জানান, ‘অপারেশন সিঁদুরের’ পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বাক্য যুদ্ধ চলছিল। শর্মিষ্ঠা পাকিস্তানি একটি মেয়েকে টার্গেট করে ভিডিয়ো করেছিলেন। এরপর ১৫ মে পুনে থেকে কলকাতায় আসেন। কারণ হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ফলে এই গ্রেফতারি বেআইনি। আমার মক্কেল ১৫ মে থেকে রোজ থানায় গিয়েছিলেন। তাঁর পরিবারের ছবি,বাড়ি,স্কুল সব পাবলিক হয়ে গিয়েছিল। থ্রেট ছিল। তাই তিনি রাতের বিমান ধরে দিল্লি চলে যান। এখানেই শেষ নয়। শর্মিষ্ঠার আইনজীবী: আমার মক্কেল আইন নিয়ে পড়ছেন। শেষ সেমিস্টারের পরীক্ষা রয়েছে। সেই কারণে আমরা অন্তর্বর্তী জামিন চাইছি।
এর প্রত্যুত্তরে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, হুমকির জন্য আনন্দপুর থানায় গিয়েছেন। গার্ডেনরিচ থানায় যাননি।
এরপরই বিচারপতি রাজা বসু চৌধুরী প্রশ্ন করেন,’অভিযুক্ত কি কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি? যে তাঁর স্কুল সহ নানা পরিচয় এফআইআর-এ উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেও তো মামলা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন?’ পাশাপাশি বিচারপতি এও জানান, ‘তাঁকেও তো গ্রেফতার করা উচিত ছিল। আমার মতে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানার নির্দিষ্ট গ্রাউন্ড থাকা উচিত ছিল।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − 2 =