আর্থিক বেনিয়মের থেকে বাদ গেল না পার্কিং লটও। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই পার্কিং লটে গাড়ি পিছু অর্থ সংগ্রহের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ৫৬৪টি মেশিন। আদতে ব্যবহার হচ্ছে বরাদ্দের ১০ শতাংশ বা তারও কম মেশিন। আর তারই সূত্র ধরে সামনে আসছে টাকার লেনদেনে বেনিয়মের ঘটনা। প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত এলাকায় প্রায় ২৭২টি পার্কিং লট রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১৪ হাজার গাড়ি থাকে। এই পার্কিং লটগুলিতে দুর্নীতি আটকাতেই এই মেশিন দেওয়া হয়েছিল। যা দিয়ে কোন গাড়ি কখন আসছে, কতক্ষন পার্কিং লটে থাকছে এবং টাকার আদান-প্রদান সব এই মেশিনের মাধ্যমে হতে পারে। খুব স্পষ্ট ভাষায়, বেআইনি পার্কিং বন্ধ করতেই এই মেশিন ব্যবহার করতে বলা হয়।
এদিকে বাস্তব ছবি বলছে ভিন্ন কথা। এই মেশিন পার্কিং লটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের মধ্যে ৭০-৭৫ শতাংশই ব্যবহার করছে না বলে খবর। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর শহর ঘুরে দেখে এমনই তথ্য কলকাতা পৌরসভার পার্কিং বিভাগের। যার ফলে, শহরের একাধিক পার্কিং লটে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা বেহাত হচ্ছে পুরসভার।
এর আগে কলকাতা পুরসভার এলাকায় গাড়ি পার্কিংয়ের লটের টেন্ডার নিয়ে একাধিকবার জলঘোলা হয়েছে। অবশেষে বেশ কয়েক বছর পর পার্কিং লটে টেন্ডার হয়েছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পার্কিং লটের টেন্ডার নিয়ে সরব হন। এমনকি বেআইনি পার্কিং বন্ধে অভিযান করারও নির্দেশ দেন। পুরসভার পার্কিং বিভাগ সূত্রে খবর, মেশিনগুলি হয় ব্যবহার হচ্ছে না অথবা চুরি হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করে নানান অজুহাত দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা বলছেন, শুরুতে যখন মেশিন দেওয়া হয় তার এক সপ্তাহের মধ্যেই দেখা যায় মেশিন ব্যবহারে অনীহা পার্কিং লটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের।এদিকে প্রায়শই শোনা যায় পার্কিং লটগুলির দায়িত্বে থাকা কর্মীদের এজেন্সিগুলি শাসকদলের নেতাদের অঙ্গুলিহেলনে চলে। ফলে সেই টাকা ঘুরিয়ে কার পকেটে ঢুকছে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। পুরসভার তথ্য বলছে, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পার্কিংয়ে থাকা কিছু গাড়ির পার্কিংয়ের টাকা পুরসভার কোষাগারে জমা পড়ছে। কিন্তু, তারপরেও মেশিন না থাকায় একটি পার্কিং লটে কখন গাড়ি ঢুকছে বা কখন গাড়ি বের হয়ে যাচ্ছে, সেটা জানা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে একাধিক গাড়ির হিসাব পুরসভা না পেলেও, পার্কিং লটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীদের পকেটে চলে যাচ্ছে বেআইনিভাবে লটগুলিতে থাকা গাড়িগুলি টাকা।