বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর। ‘বাংলা জ্বললে দিল্লিও থেমে থাকবে না’ মন্তব্যের জন্য মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিনীত জিন্দাল। দিল্লি পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠি লিখে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা থেকে। এই সভা থেকে আরজি করের ঘটনায় দোষীর ফের ফাঁসির সাজা চান মমতা। এরপরই বিজেপিকে আক্রমণ করেন। বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘কেউ কেউ মনে করছেন এটা বাংলাদেশ। আমি ওদের ভালবাসি। ওদের সংস্কৃতি আমাদের সংস্কৃতি এক। তবে এটা আলাদা রাষ্ট্র। ভারতবর্ষ একটা আলাদা রাষ্ট্র। বাংলায় যদি আগুন লাগান, কোনও রাজ্যই থেমে থাকবে না। বাংলায় আগুন লাগালে অসম থেমে থাকবে না। উত্তর-পূর্ব, উত্তর প্রদেশ থেমে থাকবে না। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লিও থেমে থাকবে না। আপনার চেয়ারটা আমরা টলমল করে দেব।’
এরপরই মমতার এই মন্তব্যের বিরোধিতা করে সরব হতে দেখা যায় একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী রীতিমোত মমতার কাছে জানতে চান, ‘দিদি, আপনার এত সাহস হল কীভাবে যে অসমকে হুমকি দিচ্ছেন? আমাদের রক্তচক্ষু দেখাবেন না।’ একইসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং এবং বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় কুমার সিনহা মমতার মন্তব্যের বিরোধিতা করেন।
আর এই প্রেক্ষিতেই এবার মমতার বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিনীত জিন্দাল। বৃহস্পতিবার দিল্লির পুলিশ কমিশনারকে একটি চিঠি লিখে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫২, ১৯২, ১৯৬ ও ৩৫৩ ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগপত্রে বিনীত জিন্দাল লেখেন, ‘দলের ছাত্র পরিষদের সভায় মমতা বলেছেন, বাংলা জ্বললে অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং দিল্লি জ্বলবে। এটা স্পষ্ট যে এই মন্তব্য প্ররোচনামূলক এবং রাষ্ট্রবিরোধী। বিভিন্ন অঞ্চলের একাধিক গ্রুপের মধ্যে হিংসা এবং ঘৃণা ছড়াতে পারে।’ এখানেই থেমে থাকেননি বিনীত জিন্দাল। আরও লেখেন, একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানুষের উপর তাঁর প্রভাব রয়েছে। সাংবিধানিক পদে থেকেও এইরকম মন্তব্যের জেরে অশান্তি ছড়াতে পারে। অভিযোগপত্রের প্রতিলিপি রাষ্ট্রপতি ভবন এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেও পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী।