গার্ডেনরিচের বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় ক্ষমাপ্রার্থী ফিরহাদ

গার্ডেনরিচে নির্মীয়মান বিল্ডিং ভেঙে ৯ জনের মৃত্যুর পর ক্ষমা চাইলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। জানালেন, ‘এটা আমার কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আর আমি এর জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।’ রবিবার রাতে এই ঘটনার পর পুর আধিকারিকদের কাঠগড়ায় তোলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।বলেন, ‘আমাকে ডিপেন্ড করতে হয় মানুষের ওপর। সবাই অ্যাক্টিভলি কাজ করছে বলে মনে হয় না।’ সঙ্গে এও বললেন, ‘কিছু কাউন্সিলর রয়েছেন, যাঁরা পাঁচিল তুলতে গেলে, রঙ করতে গেলে টাকা নেন। আবার বেশিরভাগই কাউন্সিলর রয়েছেন, যাঁরা এসবের মধ্যে থাকেন না।’

প্রসঙ্গত, গার্ডেনরিচে নির্মীয়মান বিল্ডিং ভেঙে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। এই সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন বেশ কয়েকজন। অবৈধ নির্মাণ নিয়ে পুরসভার নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিস্তর।

গার্ডেন রিচে একাধিক অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। টনক নড়েছে প্রশাসনেরও।  এলাকার  কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসীরা। তবে ঘটনার পরই দুর্ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে মেয়র দায় ঠেলেছিলেন বামেদের দিকে। ১৩ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও বেআইনি নির্মাণের জন্য বাম আমলকেই দোষারোপ করেছিলেন মেয়র। সঙ্গে দাবি করেছিলেন, এর দায় পুরকর্তাদের। তবে কাউন্সিলরকে ক্লিনচিট দেন তিনি। একইসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম স্বীকার করে নেন, ‘আমরা এখনও একশো শতাংশ অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করতে পারছি না, এটা ঠিক। এর আগেও এমন ঘটনা কলকাতায় হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক আমার সময়েও হল।’ এরই পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, ‘অবৈধ নির্মাণ অনেকটা আটকেছি। পুকুর বোঝাই আটকাচ্ছি। কোথায় কটা পুকুর রয়েছে ওয়েবসাইটে দিয়ে দিয়েছি।’

তবে বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে বাম আমলকেই দায়ী করেন ফিরহাদ। বলেন, ‘বেশিরভাগ বেআইনি নির্মাণ বাম আমলেই হয়েছে। তবে এখনও সমস্যা হচ্ছে, ওই এলাকায় গরিব মানুষ ঢুকে গিয়েছেন। অল্প পয়সার ফ্ল্যাট কিনে রয়েছে। এখন উচ্ছেদটাও সমস্যার হয়ে গিয়েছে। গরিবমানুষগুলো অল্প টাকায় ঘর কিনে রয়েছে। আমি তাই আমার বিল্ডিং ডিপার্টমেন্টকে বলি, যখন শুরু হচ্ছে, তখনই অ্যাকশন নিন।’

ফিরহাদ কাউন্সিলরদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে এও জানান, ‘কলকাতা পৌরসভার এক একজন কাউন্সিলরের এরিয়া যত বড় থাকে, তাঁর পক্ষে প্রত্যেক এলাকায় যাওয়া সম্ভব হয় না। কোন বাড়ি বৈধ, কোনটা অবৈধ, সেটা কাউন্সিলর দেখবে না।  আর তাঁর রাইটও নেই প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ করবে। কারণ কোনটা অবৈধ নির্মাণ সেটা খতিয়ে দেখা প্রশাসনিক কাজ। এক একটা এলাকায় ৫০ হাজার লোকের প্রতিনিধি কাউন্সিলর। কাউন্সিলরের কাজ, কোন এলাকায় জল নেই, কোন এলাকায় লাইট নেই, ড্রেনেজ সিস্টেম খারাপ, সেটা দেখা। অবৈধ নির্মাণ দেখা কাউন্সিলরের কাজ নয়।’

গার্ডেনরিচের ঘটনার পর ওই এলাকারই কাউন্সিলর শামস-এর গলাতেও একই সুর। তাঁর বক্তব্য, ‘কোথায় কে অবৈধ নির্মাণ করছেন, সেটা দেখা আমার কাজ নয় যে কে কোথায় অবৈধভাবে বাড়ি করছে। কলকাতা পুরনিগমের একটা টিম রয়েছে। তারা দেখবে কোথায় কী অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 7 =