একমাস হতে চলল বরাহনগর বিধানসভার উপনির্বাচন। এই উপ-নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজভবন থেকে শপথবাক্য পাঠ নিয়ে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ না আসায় পরিষেবা দিতে পারছেন না তিনি। এবার এই ইস্যুতেইমুখ খুললেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। শুধু তাই নয়, রাজ্য়পাল সি ভি আনন্দ বোসকে কার্যত একহাত নিলেনও তিনি। ফিরহাদের স্পষ্ট বক্তব্য, এটা একটা স্বাভাবিক নিয়ম। কোনও জটিলতা নেই। শুধু-শুধু ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে।
এদিকে সোমবার বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন সায়ন্তিকা। ছিলেন ফিরহাদও। সেই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য়পাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানান, ‘আমি নিজে ২০০৯ সালে এই বিধানসভার উপনির্বাচনে জিতেছিলাম। ভোট হল। তৎকালীন অধ্যক্ষ রাজ্যপালের অনুমতি নিলেন। রেজাল্টের সাত-আটদিন পর শপথ হয়ে গেল।’ একইসঙ্গে সংযোজন, ‘প্রতিবার অসভ্যতা করেন উনি। অধ্যক্ষের অধিকার খর্ব করছেন। গায়ের জোরে কেন্দ্রীয় সরকারের মোটা লোকটার কথায় উঠছেন বসছেন।’
এখানেই শেষ নয়, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা নারী নির্যাতন বিতর্কের কথাও মনে করিয়ে দেন ববি। ক্ষুব্ধ মন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যপালের চরিত্রের ঠিক নেই। আমি ওঁর জায়গায় থাকলে রিজাইন করতাম।’ একইসঙ্গে ফিরহাদ এও জানান, ‘রাজ্যপাল নির্বাচিত জন প্রতিনিধি অধ্যক্ষকে অসম্মান করছেন। আমরা নির্বাচিত। আর আপনি মনোনিত। আমাদের দর অনেক বেশি। হাউ ডেয়ার ইউ স্টপ আওয়ার ওথ? স্পিকারের অধিকার শপথবাক্য পাঠ করানো। দিনের পর দিন চলে আসেছে। বিধানসভার নিয়ম বিধায়ক স্পিকারের সান্নিধ্যে থাকবে।’ এরই রেশ ধরে ফিরহাদের প্রশ্ন, ‘কাকে অপমান করছেন?’ সঙ্গে এও মনে করিয়ে দেন, ‘আপনি মানুষকে অপমান করছেন। শপথ না নেওয়া পর্যন্ত কাজ করতে পারবে না ওরা।’ এরপরই রাজ্যপালকে বিদ্ধ করে সরাসরি ফিরহাদ বলেন, ‘কীসের রাজ্যপাল? ওঁর ক্ষমতা আছে মানুষের রায়ের বিরুদ্ধে যাওয়ার? কোনও কারণ নেই ইস্যু বানানোর।’
প্রসঙ্গত, বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভগবানগোলার নির্বাচিত বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকারের শপথ গ্রহণ ঘিরে বেশ কয়েকদিন ধরে রাজ্য-রাজভবনের জটিলতা চলছে। চালাচালি হচ্ছে দু’তরফের মধ্যে চিঠি। আজ শপথ বাক্য পাঠ নিয়ে সায়ন্তিকা রাজ্যপালকে চিঠি পাঠালে সেই চিঠি গ্রহণ করেন সি ভি আনন্দ বোস। তবে এই সবের মধ্যে আটকে গিয়ে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। এর আগে ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূলের নির্মল চন্দ্র রায়ের শপথ গ্রহণ ঘিরেও তৈরি হয়েছিল জটিলতা। তাঁর শপথ সংক্রান্ত ফাইল ফেলে রাখার অভিযোগ তুলেছিল শাসকশিবির। পরে যদিও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নির্মল রায়কে শপথ বাক্য পাঠ করান।