বানজারা গ্যাংয়ের শিকার হচ্ছেন বিদেশিরা, পদক্ষেপ কলকাতা পুলিশের

বিদেশি পর্যটকদের শিকার হিসেবে এবার বেছে নিচ্ছে রাজ্যের বানজারা গ‌্যাং। প্রথমে এরা  ভিক্ষা চাওয়ার নামে একসঙ্গে ঘিরে ধরে। তারপর পায়ে পড়ে যাওয়া থেকে ধাক্কা লেগে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ভান করা এদের কৌশল। আদতে এই ভাবে এরা তাদের শিকারকে বিভ্রান্ত করে দেওয়ার চেষ্টা করে। আর এই সুযোগেই পথচারীর পকেট থেকে টাকা, মোবাইল, কখনও বা মানিব‌্যাগ হাতিয়ে নেয়। এমন ঘটনা আগে ঘটেনি তা নয়। কিন্তু এবার তাদের ধরতে নতুন স্ট্র‌্যাটেজি তৈরি করছে পুলিশও। কারণ, পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে শহরের আশপাশের জেলার বিভিন্ন জায়গায় ডেরা বেঁধে থাকা বানজারাদেরনাবালক গ‌্যাংকে দিয়েই বড়রা এই অপরাধ করাচ্ছে।সিনিয়রদের চোখের ইশারায়  কিশোরকিশোরীরা বিদেশিদের টার্গেট করে। কারণ, তাদের মূল লক্ষ্য হল বিদেশিদের কাছ থেকে বিদেশি মুদ্রা ও মূল‌্যবান মোবাইল হাতিয়ে নেওয়া।

সম্প্রতি পার্ক স্ট্রিটে এক বিদেশি পর্যটকের কাছ থেকে এই ছকেই ইউরো, পাসপোর্ট হাতিয়ে নেয় বানজারাদেরনাবালক গ‌্যাং।এবার রাজ্যের অন‌্য জেলা বা শহরগুলিতেও এভাবে তারা দৌরাত্ম‌্য শুরু করেছে কিনা, সেদিকেও নজর রয়েছে পুলিশের। এই ধরনের ঘটনার তদন্তে নেমে পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ আধিকারিকরা মধ‌্য কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিটে তল্লাশি চালিয়ে এক ব‌্যক্তিকে গ্রেপ্তারও করেন। ফরাসি পর্যটকের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া আড়াই হাজার ইউরো ওপাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। এবার এলাকার সিসিটিভির ফুটেজ দেখে ওই বানজারাদের সন্ধান চলছে। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, এই গ‌্যাংগুলির একটি অংশ হুগলি জেলার বিভিন্ন জায়গায় ডেরা বাঁধে। এছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও উত্তর ২৪ পরগনার কয়েকটি জায়গাতেও রয়েছে তাদের আস্তানা। আর এরা শহরে আসে বা যায় সাধারণত খুব সকাল বা বেশি রাতের ট্রেনে। শিকার ধরার সহজ জায়গা হিসেবে বেছেও নিয়েছে পার্ক স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণি এলাকা। আর এই দলে থাকে সাত থেকে ১৫ বছর বয়সের কিশোর ওকিশোরী। হাতে থাকে থালা। সঙ্গে থাকে দুই থেকে তিনজন যুবক বা যুবতী। এই যুবক বা যুবতীরাই চোখের ইশারায় জানিয়ে দেয়, কোন পথচারীকে টার্গেট করতে হবে।  সেই অনুযায়ী তারা ঘিরে ফেলে সেই পথচারীকে। এসবের আগেই তালিম হয় তাদের নিজস্ব ডেরায়। পুলিশের ধারনা, এবার এরা তাদের শিকার হিসেবে বেছে নিচ্ছে বিদেশিদের। আর এই অপরাধ বন্ধ করতে পার্ক স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণি, নিউ মার্কেটের রাস্তাগুলিতে অতিরিক্ত নজরদারি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − 6 =