মোদির গ্যারান্টি সম্পূর্ণ মিথ্যাচার দাবি প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের

অলোকেশ ভট্টাচার্য

 

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪- আবহে কেন্দ্র যে  ‘মিথ্যাচার’ করছে তা এবার সবার সামনে তুলে ধরলেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ উপদেষ্টা অমিত মিত্র। এর পাশাপাশি ১০ দফা পয়েন্ট তুলে ধরে ‘মোদির গ্যারান্টি’কে তুলোধোনাও করতে দেখা গেল অমিত মিত্রকে।

অমিত মিত্র খুব স্পষ্ট ভাষায় জানান, মোদি যে গ্যারান্টি দেন, সেটা আদতে ‘৪২০’। একইসঙ্গে মোট দশটি পয়েন্টও তুলে ধরেন সাংবাদিক বৈঠক থেকে। যেমন, প্রধানমন্ত্রী বলেন নারী শক্তির কথা। অথচ, দেশে মহিলাদের প্রতি অপরাধপ্রবণতা অনেকটাই বেড়েছে। তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশে প্রতি ঘণ্টায় ৫১ জন মহিলা অপরাধের শিকার হচ্ছেন।

এরপরেই তুলে আনেন বেকারত্বের কথা। তাঁর কথায়, সিএমআইয়ের তথ্য বলছে, দেশে যতজন বেকার রয়েছে, তার মধ্যে ৮৩ শতাংশ রয়েছেন যুবক-যুবতী। এঁদের মধ্যে শিক্ষিত যুবক-যুবতীর সংখ্যা ৬৬ শতাংশ। বেকার যুবক-যুবতীদের মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ ছেলে-মেয়েরা স্কিল ইন্ডিয়ায় ভোকেশনাল ট্রেনিং পাচ্ছেন বলেও জানান রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ উপদেষ্টা অমিত মিত্র।

একইসঙ্গে রাজ্যের শিল্পায়ন নিয়েও আওয়াজ তোলেন বিরোধীরা। অথচ, দেশে পরিবারের আর্থিক সঞ্চয় সবচেয়ে নিম্ন জায়গায় পৌঁছেছে ৫০ বছরে। বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করছে, রাজ্য থেকে অনেক শিল্পপতি চলে গিয়েছেন। অমিত মিত্র দাবি করেন, দেশ থেকে ভালো লগ্নিকারী ব্যবসায়িকদের মধ্যে ৩৫ হাজার জন ভারতের নাগরিকত্ব ছেড়ে দিয়ে অন্য দেশে চলে গিয়েছেন। রাজ্যের ঋণ নিয়েও সুর চড়াতে থাকেন বিরোধীরা। অমিত মিত্রর দাবি, সারা বিশ্ব থেকে ধার নিচ্ছে কেন্দ্র। দেশের ঋণের পরিমাণ ১০ বছরে ১০০ শতাংশ হারে বেড়েছে। ৩ লাখ ৬৫ হাজার কোটি ছিল ১৩-১৪ সালে। সেটা ২০২২-২৩ এ বেড়ে হয়েছে ৭ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা।

এছাড়াও, দেশের চাষিরা কেন এমএসপি পাচ্ছেন না, দেশে কৃষক আত্মহত্যার সংখ্যা কেন বাড়ল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রাজ্য়ের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। এছাড়াও দেশে ‘হেট স্পিচ’ (কুরুচিকর বক্তব্য) ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। ধর্মীয় অসংহতিমূলক কথাবার্তা বাড়ছে। মণিপুর-এ নারী নির্যাতনের এত বড় ঘটনা ঘটে গেলেও, সেখানে গেলেন না প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যের অন্যতম সেরা প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে হেয় করছেন বিরোধী দলের অনেকেই। এরপরেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজ্যে এসে এই প্রকল্পে মাত্র ১০০ টাকা বলছেন। রাজ্যের ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি নিয়েও নির্দিষ্ট হিসাব দেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। তিনি জানান, ঋণের পরিমাপ মাপা হয় জিডিপি রেট ধরে। সরকারে আসার সময় ঋণের সঙ্গে ৪১-৪২ শতাংশ জিডিপি অনুপাত ছিল। সেটা এখন ৩০-৩৪ শতাংশ হয়েছে। রাজ্য প্রায় ১০ শতাংশ সেই অনুপাত কমাতে পেরেছে বলে দাবি করেন তিনি। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে এর আগে সংসদেএকাধিক প্রশ্ন করা হলেও প্রধানমন্ত্রী তাঁর উত্তর দেন না। সেই কারণেই মোদির গ্যারান্টি ‘৪২০’ বলে দাবি করেন অমিত মিত্র।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + nineteen =