প্রয়াত জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক

প্রয়াত জম্মুকাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সত্যপাল মালিক বয়স হয়েছিল ৭৯। সূত্রে খবর, বেশ কিছুদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসাধীন ছিলেন দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে।উত্তরপ্রদেশের বাঘপতের বাসিন্দা সত্যপাল মালিক ছিলেন জাঠ সম্প্রদায়ের নেতা। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসে ১৯৭৪ সালে চৌধুরী চরণ সিংহের ভারতীয় ক্রান্তি দলের টিকিটে বিধায়ক নির্বাচিত হন। রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। পরে জনতা দলের হয়ে লোকসভায় প্রতিনিধিত্ব করেন আলিগড় কেন্দ্র থেকে। রাজনৈতিক কেরিয়ারে একাধিকবার দলবদল করেছেন। ছিলেন কংগ্রেসে, লোক দলে ও সমাজবাদী পার্টিতেও।

২০১৭ সালে তাঁকে বিহারের রাজ্যপাল করা হয়। অল্প সময়ের জন্য ওড়িশার অতিরিক্ত দায়িত্বও পেয়েছিলেন। ২০১৮ সালের অগস্টে জম্মুকাশ্মীরের রাজ্যপালের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। ২০১৯ সালে রাজ্যের বিশেষ মর্যাদা রদ ও জম্মুকাশ্মীরকে বিভক্ত করে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের মতো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের সময় রাজ্যপাল ছিলেন তিনিই। ওই সময়েই পুলওয়ামা জঙ্গি হামলায় শহিদ হন ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান। এরপর গোয়া ও মেঘালয়ের রাজ্যপালের দায়িত্বও সামলান সত্যপাল মালিক।

রাজ্যপালের পদে থেকে অবসর নেওয়ার পর বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করে শিরোনামে আসেন তিনি। ২০২০২১ সালে বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষক আন্দোলনের পাশে দাঁড়ান। আর ২০২৩ সালে এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, পুলওয়ামা হামলার সময় কেন্দ্র তাঁকে চুপ থাকতে বলেছিল। এও জানিয়েছিলেন, সিআরপিএফের অনুরোধ সত্ত্বেও বিমানের ব্যবস্থা করা হয়নি, যার জেরে জওয়ানদের সড়কপথে যেতে হয় এবং সেখানে হামলার শিকার হন তাঁরা। বিজেপি তাঁর এই দাবিকে খারিজ করে কিছু ভিডিও প্রকাশ করে, যেখানে মালিককে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশংসা করতে দেখা যায়। পাল্টা প্রশ্ন তোলা হয় তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও। সত্যপাল মালিকের প্রয়াণে রাজনীতির এক বর্ণময়, বিতর্কিত অধ্যায়ের অবসান ঘটল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − six =