সরকারি খেতাব বা পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করা চলবে না, দিতে হবে মুচলেকা, এমনটাই সুপারিশ সংসদীয় কমিটির

নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার এবার নয়া নিয়ম চালু করতে চলেছে সরকারি খেতাব পুরস্কার বা সম্মান জ্ঞাপনের ক্ষেত্রে। কাউকে সরকারি পুরস্কার, খেতাব, সম্মান, পদক নিতে হলে আগাম মুচলেকা দিয়ে জানাতে হবে যে, তিনি তা প্রত্যাখ্যান করবেন না, এমনটাই সুপারিশ সংসদীয় কমিটির।এমন মুচলেকা দেওয়ার কারণ, যাতে তাঁরা কোনও কিছুর প্রতিবাদস্বরূপ পুরস্কার গ্রহণের পরে তা প্রত্যাখ্যান না করতে পারেন। পরিবহণ, পর্যটন এবং সংস্কৃতি বিষয়ক সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি এ বিষয়ে একটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছে। সেটা হল ২০১৫ সালে প্রখ্যাত লেখক নয়নতারা সেহগল সহ ৩৯ জন শিল্পী সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার সমালোচনার মুখ বন্ধ করে দিতে চায়। সংখ্যালঘুদের এখানে নিশানা করা হয়। ধর্মীয় উত্তেজনায় মদত দেওয়া হয়। এছাড়া এমএম কালবুর্গির খুনের প্রতিবাদও করেন তাঁরা। কমিটি তার রিপোর্টে বলেছে, যাঁরা পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তারা কিন্তু অকাদেমির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেননি। সংস্থাকে অপমান করার পরেও তাঁরা অকাদেমির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এই প্রসঙ্গে সংসদীয় কমিটির প্রধান ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ভি বিজয়সাই রেড্ডিসহ ১০ জন রাজ্যসভা সদস্য এবং ৩১ জন লোকসভা সদস্যের মতে, পুরস্কার ফেরত দেওয়ার মতো ঘটনায় অন্য পুরস্কার প্রাপকদের অসম্মানিত করা হয়। শুধু তাই নয় পুরস্কারেরও সম্মান এবং মর্যাদাও ক্ষুণ্ণ হয়। কমিটির মতে, প্রত্যেকের নিজ নিজ রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পারে। কিন্তু, শিল্পী ও বুদ্ধিজীবীরা যাতে ভবিষ্যতে সম্মানের অশ্রদ্ধা না করতে পারেন তার জন্যই এই পদক্ষেপ।

এর পাশাপাশি কমিটির তরফ থেকে এও জানানো হয়, ‘আমাদের সুপারিশ হল যখন পুরস্কার দেওয়া হবে, তখনই প্রাপকের মত গ্রহণ করতে হবে। যাতে তিনি রাজনৈতিক কারণে পরে আর তা প্রত্যাখ্যান না করতে পারেন। এটা দেশের পক্ষেও অসম্মানের।’ যদিও কমিটির এক সদস্য এই সুপারিশের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে প্রত্যেকের বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে। একইভাবে যে কোনও মাধ্যমে প্রতিবাদ করারও অধিকার রয়েছে ভারতবাসীর। পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করাও গণতান্ত্রিক অধিকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − 3 =