মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিকে থোড়াই কেয়ার, কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ রাজ্যপালের

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবন-নবান্ন সংঘাতের মাত্রা ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। মঙ্গলবার শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি নিশানা করলেও তাতে থোড়াই কেয়ার করেন রাজ্যপাল তা যেন বুঝিয়ে দিলেন আরও এক বিশ্ববিদ্য়ালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করে। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী সিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান থেকে রাজ্যপালকে আইন মেনে চলার বার্তা দিয়েছিলেন। তবে মমতার ‘বারণ’ সত্ত্বেও ফের রাজ্যের কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করে বসলেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। বুধবার মধ্যরাতে নদিয়ার কৃষ্ণনগরের কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করলেন অধ্যাপক কাজল দে-কে। রাজভবন সূত্রে খবর, মধ্যরাতে তাঁর নিয়োগপত্রে সই করেন রাজ্যপাল বোস। শুধু তাই নয়, বুধবার মধ্যরাতে রাজভবনের তরফে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্যের ছবি দিয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশিত হয়। সঙ্গে প্রকাশ করা হয় একটি ভিডিয়োও। তাতে দেখা যাচ্ছে রাজ্যপাল নিয়োগনামাই সই করছেন। কাজল দে বর্তমানে ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁকে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্তে রাজভবন-নবান্ন সংঘাত আরও বাড়বে বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদ থেকে রাজনীতিবিদরা।

১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে রাজ্য-রাজ্যপাল দ্বন্দ চরমে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, রাজ্যপাল বোসকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না কেউই। অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপাল বোস কোনও আইন মানছেন না বলে অভিযোগ সরকারে। মঙ্গলবার শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান থেকে এই নিয়ে রাজ্যপালকে হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ‘আর্থিক বাধা’ তৈরির বার্তাও দেন মমতা।

মঙ্গলবারের শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান থেকে মমতা বলেন, ‘যা খুশি তাই করে যাচ্ছেন। শিক্ষা ব্যবস্থা যাতে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে, সেই চক্রান্ত চলছে। এই চক্রান্ত আমরা মানব না। উনি মুখ্যমন্ত্রী কি নিজেকে মুখ্যমন্ত্রীর থেকে নিজেকে বড় ভাবছেন? সে উনি বড় হতেই পারেন। কিন্তু এমন যদি চলতে থাকে, তাহলে আমি অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরির করব। দেখি কে টাকা দেয়। যে বিশ্ববিদ্যালয় রাজভবনের কথা শুনে চলবে, সেখানে এটাই করা হবে। এই ক্ষেত্রে টিট ফর ট্যাট। আপোস করার কোনও প্রশ্নই নেই। উনি উপাচার্য নিয়োগ করতে পারেন। কিন্তু টাকা আমরা দিই, শিক্ষকদের বেতনও আমরা দিই।’ মঙ্গলবার রাজভবনের সামনে ধরনার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, ‘রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধসিয়ে দেওযার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু আমার এটা হতে দেব না। প্রয়োজন হলে রাজভবনের সামনে আমি ধরনায় বসব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − 6 =