নিজের পছন্দের মতো নিরাপত্তারক্ষীদের ড্রেস কোড নিয়ে ফের বিতর্কে জড়ালেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, রাজভবনের গেটের বাইরে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের পোশাকের রং নিয়ে আপত্তি জানান রাজ্যপাল। এডিসি মর্যাদার আধিকারিকদের তিনি স্পষ্ট নির্দেশ দেন যে রাজভবনের বাইরে পুলিশের পোশাক যেন খাঁকি রংয়ের হয়। এরপর এডিসিদের পক্ষে এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
এদিকে কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকেও স্পষ্ট জানানো হয় যে, যেহেতু কলকাতা পুলিশের পোশাকের রং সাদা তাই এ বিষয়ে বদল করা সম্ভব নয়। যদিও সূত্রে খবর, রাজ্যপাল যে কোনও ভাবেই হোক, পোশাকের এই বদল চাইছেন। এদিকে কলকাতা পুলিশের ক্ষেত্রে সাদা পোশাক বিধির ইতিহাস প্রায় ১৮০ বছরের। এর পিছনে বৈজ্ঞানিক ও আবহাওয়াজনিত কারণ ছিল। তথ্য বলছে, ১৮৪৫ সালে ব্রিটিশ শাসকরা কলকাতা পুলিশের কর্মীদের সাদা পোশাক পরার প্রচলন করেন। উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় আর্দ্রতাজনিত কারণে ও চড়া রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বলে সাদা পোশাকের প্রচলন। তবে দেশের অন্য প্রায় সব রাজ্যে পুলিশের পোশাক খাঁকি রংয়ের। বর্তমান রাজ্যপাল প্রাক্তন আমলা হওয়ায় অন্য রাজ্যের খাঁকি পোশাক তাঁর নজরে থাকতে পারে। তবে পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকের মত, রাজভবনের গেটের অর্থাৎ বাইরে কর্তব্যরত পুলিশের খাঁকি পোশাক হলে বিধিতেই বদল আনতে হয়।
মূলত নর্থ গেটেই বেশি সংখ্যক পুলিশ থাকে। রিজার্ভ বেঞ্চ থেকেই এঁদের মোতায়েন করা হয়ে থাকে। রাজভবনের বাইরে বিক্ষোভ বা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে নজর রাখতে হয়। তবে তাঁদের নির্দেশ দিয়ে থাকেন এডিসি। উল্লেখ্য, রাজ্যপালের দু’জন এডিসি রয়েছেন। এই কথাটি এসেছে ফরাসি শব্দ এড-দ্য-ক্যাম্প থেকে। যার বাংলা তর্জমা করলে হয় পার্শ্বচর। রাজ্যপাল যখন রাজভবনে থাকেন খুঁটিনাটি নানা বিষয় তাঁদের দেখতে হয়। এর মধ্যে একজন পুলিশের আধিকারিক ও অন্যজন সেনা আধিকারিক হয়ে থাকেন।
তবে এই নতুন ড্রেস কোড নিয়ে ফের এক বিতর্ক তৈরি হল বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজ্যপাল বিরোধী রাজনৈতিক মহল তাঁর এই আচরণকে ‘তুঘলকি’ বলেই তকমা দিয়েছেন বলে সূত্রে খবর। রাজ্যপাল নানা কারণে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছেন, এতে প্রশাসনিক স্তরে সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে মত আধিকারিকদেরও। রাজ্যপালের কিছু ‘খেয়াল’ অনেকক্ষেত্রে প্রশাসনিক স্তরে জটিলতাও তৈরি করছে।