রাজ্যপালের রিপোর্ট পেশ উদ্দেশ্য প্রণোদিতঃ কুণাল

মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের ঘটনার একমাস পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট পেশ করেছেন। এদিকে শাসকদল তৃণমূলের বক্তব্য়, জনজীবন যখন স্বাভাবিক, তখন নতুন করে পরিস্থিতি ঘোরালো করার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের এই রিপোর্ট পেশ  রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আর এই রিপোর্ট পেশের ঘটনায়  ক্ষোভ প্রকাশ করে তৃণমূলের তরফ থেকে স্পষ্ট বাষায় জানানো হয়,বিজেপির প্ররোচনার রাজনীতিতে পা দিয়েই দলের নেতাদের খুশি করতে রিপোর্ট পেশ করেছেন বাংলার রাজ্যপাল।
প্রসঙ্গত মুর্শিদাবাদ সফর করেছিলেন রাজ্যপাল। ওয়াকফ আইন-বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ, সুতিতে হিংসা ছড়ালে রাজ্যের পুলিশ বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্রিয় হয়। ধরপাকড়ও করে। আদালতের নির্দেশে নামানো হয় কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী। সেই পরিস্থিতিতে ১৯ এপ্রিল মালদহের আশ্রয় শিবির ও সামশেরগঞ্জের গ্রামে গিয়ে রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার যেভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে, তা যথাযথ। এই ঘটনার একমাস পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে যে রিপোর্ট পেশ করেছেন রাজ্যপাল তাতে বার্তা একেবারে উল্টো। কারণ,রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেছেন,পরিস্থিতি যদি আবার খারাপ হয় তবে সেখানে ৩৫৬ ধারা অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে আরও বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সুপারিশও করেন তিনি।
এ-প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, রাজ্যপাল যে রিপোর্ট দিয়েছে সেটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি তাঁর পলিটিকাল অ্যাসাইনমেন্ট-জনিত কারণে রিপোর্ট দিয়েছেন। তাঁর সংযোজন, প্রথমত রাজ্যপাল জানেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। সেখানে ‘অবনতি’, ‘যদি হয়’ এই কথাগুলো আসে না। দুই, রাজ্যপাল জানেন ওই সীমান্তবর্তী এলাকায় সীমান্তরক্ষার দায়িত্ব বিএসএফের। সেটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আওতাধীন, দেখেন অমিত শাহ। যদি ওপাশ থেকে এপাশে হামলাকারীরা এসে উসকানি দেয়, সেটা দেখার দায়িত্ব বিএসএফের, যারা তাদের দায়িত্ব সীমান্তরেখা থেকে ১৫ থেকে ৫০ কিমি করে নিয়েছে। তিনি বলেন, বিএসএফকে সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। সেই সুপারিশের বদলে তিনি বাংলাকে কলুষিত করলেন। বিজেপিকে খুশি করতেই তিনি ‘যদি’ ‘কিন্তু’ লাগিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রিপোর্ট দিয়েছেন। যদিও বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, বিজেপি রাষ্ট্রপতি শাসন দিয়ে ক্ষমতায় আসে না। কিন্তু মুর্শিদাবাদে যা ঘটেছিল তা যথাযথ দেখেই রিপোর্ট দিয়েছেন রাজ্যপাল। পাশাপাশি রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য়,’আমরা এবার রেজাল্ট চাই। রাজ্যপাল বলেছেন, আবারও কিছু হলে রাষ্ট্রপতি শাসন করা হোক। রাষ্ট্রপতি শাসন জারির আবেদনের ক্ষেত্রে যে ধরনের নির্দিষ্ট সুপারিশের প্রয়োজন হয়, আমার মনে হয় না এক্ষেত্রে সেটা রয়েছে। তবে রিপোর্টটা স্বাগত করার মতো। রাজ্যপাল গ্রাউন্ডে গিয়েছিলেন। এই রিপোর্টকে এককথায় বাংলার শান্তিকামী গণতান্ত্রিক মানুষ স্বাগত জানাতে পারেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − one =