সন্দেশখালির ঘটনায় তদন্ত করতে সিবিআইকে সিট গঠনের নির্দেশ আদালতের

সন্দেশখালির ঘটনায় জনস্বার্থ ও স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দুটো ক্ষেত্রেই তদন্ত করবে সিবিআই। আর সেই কারণেই সিবিআই-কে সিট গঠন করার নির্দেশ  কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের। জমি দখল, ধর্ষণ, চাষের জমিকে ভেড়িতে পরিবর্তন, তফশিলি জাতির মানুষদের উপর অত্যাচার করা সহ সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করবে সিবিআই। আদালতের নজরদারিতে হবে তদন্ত। একইসঙ্গে এ নির্দেশও দেওয়া হয়েছে, রাজ্যকে সব রকম সাহায্য করতে হবে। সঙ্গে এও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে,  যে কোনও পদমর্যাদার ব্যক্তিকে তদন্তের স্বার্থে ডেকে পাঠাতে পারবে সিবিআই। যেহেতু রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাই নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে সিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হল, এদিন এমনটাই পর্যবেক্ষণ প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চের। এরই পাশাাপশি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, সেখানকার মানুষ তাঁদের অভিযোগ সরাসরি সিবিআইকে যাতে জানাতে পারে তার জন্য সিবিআইকে পোর্টাল তৈরি করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফ থেকে। ১৫ দিনের মধ্যে যাবতীয় নথি সিবিআইকে জমা দিতে হবে রাজ্য পুলিশে। এর পাশাপাশি আদালতের তরফ থেকে বুধবার এ নির্দেশও দেওয়া হয় যে, স্পর্শকাতর এলাকায় ১৫ দিনের মধ্যে সিসিটিভি বসাতে হবে, বসাতে হবে এলইডি আলোও। প্রসঙ্গত, মামলাকারীদের আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল, প্রাক্তন বিচারপতিকে দিয়ে কমিশন গড়ার আর্জি জানিয়েছিলেন।

আদালত সূত্রে খবর, বুধবারের শুনানিতে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘সব কিছু দেখে আমাদের কোন সন্দেহ নেই যে এক্ষেত্রে স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থার প্রয়োজন রয়েছে। রাজ্য সব সহযোগিতা করবে তদন্তকারী সংস্থাকে।’ প্রাক্তন বিচারপতিকে দিয়ে কমিশন করার আর্জির বিষয়ে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ,  ‘আমাদের মনে হয় এক্ষেত্রে সিবিআই তদন্ত করুক। সিবিআই এই মামলায় ইতিমধ্যেই যুক্ত, তাই তারাই তদন্ত করতে পারবে। সিবিআইকে সাহায্য করবে রাজ্য।’

এই তদন্তের পর সিবিআইকে জানাতে হবে কাদের জমি নেওয়া হয়েছে, কীভাবে হয়েছে, তাও। এ ব্যাপারে সিবিআই-কে যে কেউ এক্ষেত্রে তথ্য দিতে পারে। সিবিআই এই জমি নিয়ে বিস্তারিত তদন্তের পর রিপোর্ট দেবে। তারপর আদালত এব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি।  তবে বিচারপতির আরও নির্দেশ, তদন্তের পাশাপাশি, সিবিআই-কে সাক্ষীদেরও নিরাপত্তার বিষয়টিকে সুনিশ্চিত করতে হবে। সন্দেশখালির উপদ্রুত এলাকায় বসাতে হবে সিসিটিভি।

এদিকে আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল সন্দেশখালিতে ক্যাম্প করে নারীদের নির্যাতনের অভিযোগ নথিভুক্ত করেন। পরে সেগুলি হলফনামা আকারে আদালতে জমা দেন। অভিযোগের ভয়াবহতা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন প্রধান বিচারপতি। তদন্ত যে স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থার হাতেই যেতে চলেছে তার আভাস মেলে গত শুনানিতেই। মামলাকারীর আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল বলেন, ‘আমরা যে অভিযোগ করছিলাম, ওখান থেকে সব অভিযোগ নিয়ে হলফনামা জমা দিয়েছিলাম। অনেক শাহজাহান রয়েছে। ১৫০ জনের নাম রয়েছে। আমি সেই তালিকা সিবিআই-কে দেব। গ্রেফতার হবে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 + twenty =