স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় দুর্নীতির ঘটনার কথা শোনা যাচ্ছে বহুকাল ধরেই। আর তা ধরতে কৃত্রিম মেধার প্রয়োগ শুরু করল স্বাস্থ্য দফতর। সেখানেই কয়েকটি ঘটনা নজরে আসতে স্বাস্থ্যকর্তাদের কপালে গভীর ভাঁজ। কারণ, বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে ভর্তি করিয়ে বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের নামে স্বাস্থ্যসাথীর বিল করার অভিযোগ ধরা পড়েছে। দেখা গিয়েছে, জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়ার মতো সাধারণ অসুখের চিকিৎসার জন্য রোগীকে দশ দিনের বেশি ভর্তি রাখা হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে। যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অপ্রয়োজনীয়। এ ধরণের দুর্নীতি রুখতে এবার পদক্ষেপ করল নবান্নে। স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি নিয়ম বদলে ফেলা হল। ইতিমধ্যেই সেই নির্দেশিকা জারি হয়েছে।
সাধারণ রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগীকে দশ দিনের বেশি হাসপাতালে ভর্তি রাখা হলে তা জানাতে হবে স্বাস্থ্য ভবনকে। মেডিক্যাল অডিট টিম যদি মনে করে রোগীর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন রয়েছে, তাহলেই একমাত্র অনুমোদন মিলবে। যদি অনুমোদন না নিয়ে দশ দিনের বেশি রোগীকে ভর্তি রাখার প্রমাণ মেলে, তবে বিমা সংস্থার মধ্যস্থতাকারী তৃতীয় পক্ষ, সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে জরিমানা বা কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সাধারণ রোগের ক্ষেত্রে রোগী পিছু দৈনিক দেড়-দু’হাজার টাকা করে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে দেওয়া হয়। তাই ওই সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোম স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে ভর্তি নিতে রাজি হয় না। আবার রোগী ভর্তিতে রাজি হলেও লাভের আশায় দশ দিনের বেশি রোগীকে রেখে দেওয়া হয়। নয়া নির্দেশিকায় আর তা হবে না। তবে সাধারণ রোগের ক্ষেত্রে রোগীকে প্রয়োজনে দশ দিনের বেশি ভর্তি থাকতে হলে সেই খবর অবশ্যই স্বাস্থ্য ভবনকে জানাতে হবে। অর্থাৎ, দরকারের ১০ দিনের বেশিও চিকিৎসার জন্য় রোগী বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে ভর্তি থাকবেন।
এছাড়া, শল্য ও স্ত্রী রোগের ক্ষেত্রেও অস্ত্রোপচারেও অনিয়ম নজরে এসেছে স্বাস্থ্য ভবনের। দেখা যাচ্ছে, ওই দুই ক্ষেত্রে পূর্বপরিকল্পিত যে অস্ত্রোপচারের জন্য রোগী ভর্তি হয়েছেন, সেটির পাশাপাশি অন্য কোনও সমস্যা চিহ্নিত করে তারও অস্ত্রোপচার করে দেওয়া হচ্ছে। এমনটিও আর করা যাবে না বলে সতর্ক করা হয়েছে। নির্দেশ অনুসারে, নির্দিষ্ট যে প্যাকেজে রোগী ভর্তি হচ্ছেন, সেটিই শুধু মিলবে। তার সঙ্গে অতিরিক্ত প্যাকেজ জুড়ে বিল বাড়ানো যাবে না।