আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে আগামী ৪৮-৭২ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দক্ষিণবঙ্গে। আলিপুর আবাহওয়া দপ্তর সূত্রে এও খবর, উত্তরবঙ্গে কমবে বৃষ্টির পরিমাণ। অন্যদিকে দক্ষিণবঙ্গে বাড়বে বৃষ্টি। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে। গত এক সপ্তাহের ভারী বৃষ্টির প্রভাবে উত্তরবঙ্গের নদীতে জলস্তর বিপদসীমার কাছাকাছি। দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি বাড়বে আগামী তিন দিন। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি প্রায় সব জেলাতেই। দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলাতে ভারী বৃষ্টি হতে পারে রবি এবং সোমবার। বৃষ্টি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণায়। এই ৩ দিনে কলকাতাতেও বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। বৃষ্টিপাতের সঙ্গে রাজ্যজুড়ে রয়েছে বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রপাতের আশঙ্কাও। আর সেই কারণেই দামিনী অ্যাপ ডাউনলোড করে নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে। এই ভারী বৃষ্টির জেরে আগামী ৩ দিনে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা নামতে পারে।
কলকাতায় শনিবার সকাল থেকে মেঘলা আকাশ। মঙ্গলবার পর্যন্ত বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। বজ্রপাতের আশঙ্কা। তবে বৃষ্টি হলেও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে। রবিবার বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। তাপমাত্রা কমবে আগামী তিন দিনে। কলকাতায় শনিবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের তাপমাত্রা। গতকাল বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৫৪-৯৪ শতাংশ। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা শহরে তাপমাত্রা থাকবে ২৭-৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টি হয়েছে ১১.৩ মিলিমিটার।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, ১২ জুন উত্তরবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের পর মালদহের ওপরে তার অবস্থান ছিল ১৮ জুন পর্যন্ত। এরপরই ২৩ জুন গোটা রাজ্যে ছেয়ে গিয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু। অর্থাৎ বাংলার আনাচে-কানাচে বর্ষা প্রবেশ করেছে। দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢোকার অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হতেই ১৯ জুন বর্ষা ঢুকে পড়ে দক্ষিণবঙ্গে। ২২ জুন আরও একটু এগিয়ে প্রায় সব জেলাতেই পৌঁছে গেল মৌসুমী বায়ু।
এদিকে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে গত সাত দিনের মতো না হলেও বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি চলবে। শনিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে উত্তরবঙ্গে। গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে পার্বত্য এলাকায় ল্যান্ড স্লাইড হওয়ার সম্ভাবনা। নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা। ইতিমধ্যেই তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা-সহ উত্তরবঙ্গের নদীগুলি জলস্থল বেড়ে বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।
এদিকে মৌসম ভবন সূত্রে খবর, দেশে তাপপ্রবাহের আর কোনও সম্ভাবনা নেই। বরং আগামী কয়েক দিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে পূর্ব ভারত, উত্তর পূর্ব ভারত মধ্য ভারত এবং দক্ষিণ ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে। এই বৃষ্টির ফলে ৩ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমতে পারে পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য ভারতের রাজ্যগুলিতে। বৃষ্টি বেশি হওয়ার সম্ভাবনা ওড়িশা, অসম, মেঘালয়, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং তেলেঙ্গানায়। বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টি হবে অসম, মেঘালয়, মনিপুর, মিজোরাম-সহ উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হবে পঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, দিল্লি-সহ উত্তর-পশ্চিম ভারতের রাজ্যগুলিতে।