ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই দক্ষিণবঙ্গে, ২১ জুলাইয়ে আংশিক মেঘলা আকাশ

বাংলার উপকূল সংলগ্ন এলাকায় অর্থাৎ বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে চলেছে, এমনটাই জানানো হল আলিপুর আবহাওযা দপ্তরের তরফ থেকে। যদিও এখনও ভারী বৃষ্টিপাতের সেই অর্থে কোনও সতর্কতা নেই ৷ তবুও মঙ্গলবার থেকে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় ৷ অর্থাৎ, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া-সহ একাধিক জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ৷
তবে সবার নজর এখন একুশে জুলাইয়ের দিকে। শুক্রবারেও খুব একটা ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। মূলত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। আংশিক মেঘলা আকাশ রাজ্যের সর্বত্রই থাকবে, এমনটাই জানিয়েছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশ কুমার দাস ৷ এদিকে কলকাতাতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে কয়েক পশলা। দিনের বেশিরভাগ সময় আংশিক মেঘলা আকাশ ও স্বাভাবিক পরিবেশ থাকলেও কয়েকটি স্পেলে বৃষ্টি হতে পারে। ১৫ মিনিট থেকে আধ ঘণ্টার স্পেলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে যে ঘূর্ণাবর্ত তা আগামী ৪৮ ঘণ্টায় নিম্নচাপে পরিণত হবে এবং তার অভিমুখ থাকবে ওড়িশার দিকে। এর প্রভাবেই জলীয় বাষ্প ঢুকবে সাগর থেকে এবং বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে স্থানীয়ভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা। পাশাপাশি আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর থেকে এও জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে দুটি সিস্টেম রয়েছে। একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সেটি ওড়িশার অভিমুখে রয়েছে। আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় নিম্নচাপে পরিণত হবে। অন্যদিকে মৌসুমী অক্ষরেখা অম্বিকাপুর চাঁদবালি হয়ে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। এই দুটো সিস্টেম ওড়িশার উপরে অবস্থান করায় প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকবে ওড়িশার দিকে। যেহেতু দক্ষিণ দিকে ঝুঁকে রয়েছে সিস্টেম তাই ওড়িশা, ছত্তিশগঢ় এবং তেলেঙ্গানাতে বৃষ্টি বেশি হবে। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, যেহেতু দুটি সিস্টেমই দক্ষিণ দিকে রয়েছে তাই খুব বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই রাজ্যে। আগামী ৪-৫ দিন ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা একেবারেই নেই। উত্তর ও দক্ষিণ দুই বঙ্গেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। দক্ষিণবঙ্গে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় ‘পাসিং শাওয়ার’-এর মতো বৃষ্টি হতে পারে। ছোট ছোট স্পেলে বৃষ্টি হবে। দুটি স্পেলের মাঝে আকাশ পরিষ্কার থাকবে।
পাশাপাশি তুলে ধরা হয়েছে এবারের রাজ্যে বৃষ্টির ঘাটতির পরিসংখ্যানও। সমগ্র রাজ্যের হিসেবে ১৩ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের ৩৬ শতাংশ ঘাটতি। কলকাতায় ৪৭ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে বৃষ্টির। সামগ্রিকভাবে দুর্বল মৌসুমী বায়ুর জন্য বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। আগামী কয়েকদিনও সেই ঘাটতি মেটার সম্ভাবনা কম।
এদিকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ঝড়বৃষ্টি হতে চলেছে ৷ চড়া রোদের ফাঁকেই বৃষ্টিপাত হয়েই চলেছে ৷ কখনও মেঘ,কখনও বৃষ্টি, আবার কখনও বা চড়া রোদ। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে ৷ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বুধবার কলকাতা-সহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত হতে পারে বলেই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে ভারী বৃষ্টিপাতের কোনও সম্ভাবনা নেই ৷
কলকাতা ছাড়াও বৃষ্টি হবে হাওড়া,হুগলি,ঝাড়গ্রাম,পশ্চিম মেদিনীপুর,উত্তর ২৪ পরগনা,দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও ৷ তবে বৃষ্টি হলেও আগামী কয়েকদিনে তাপমাত্রার কোনও পরিবর্তন হবেনা ৷
এদিকে উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং,জলপাইগুড়ি,কালিম্পং,আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদহে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে৷
একইসঙ্গে বৃহস্পতিবারেও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পংয়ে ৷ আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদহে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে ৷

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − 14 =