আগামী বছর থেকে শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানের জায়গা বদল করতে হবে, নির্দেশ হাইকোর্টের

দিন দুয়েক বাদেই তৃণমূলের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠান। প্রতি বছরের মতো এবার ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের কাছে সভা হওয়ার কথা। প্রস্তুতিও তুঙ্গে। এদিকে এই সভার দিন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কেমন হবে তা নিয়েও একাধিক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কলকাতা পুলিশ। তবে বৃহস্পতিবার এই ২১ জুলাইয়ের সভা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা গেল আদালতকে। সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয়, এই অভিযোগ তুলে ২১ জুলাই নিয়ে একটি মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চে ছিল সেই মামলার শুনানি। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, কলকাতার রাস্তা বন্ধ করে, যানজট করে, বাস তুলে নিয়ে একুশে জুলাই করা যাবে না, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। এমনকি ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনেও একুশে জুলাইয়ের সভা আর হবে কিনা তা নিয়ে দীর্ঘ শুনানি করতে হবে বলে জানান বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের। এর পাশাপাশি বিচারপতি শাসকদল ও পুলিশকে যানজট না হওয়ার মুচলেকা দিতে হবে বলে নির্দেশ দেন। প্রসঙ্গত, মামলাকারীর দাবি ছিল, ব্যস্ত সময়ে সাধারণ মানুষের অসুবিধা হয় ওই সভার জন্য। এদিন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘এই সভা নিয়ে আমি কিছু শর্ত দেব সময় আর বেশি বাকি নেই, তাই জায়গা বদল করার কথা বলেনি আদালত। তবে আগামী বছর থেকে জায়গা বদল করে ভিক্টোরিয়া হাউসের বদলে শহিদ মিনার, বিগ্রেড প্যারেড গ্রাউন্ডে এই সভা করা যায় কি না, তা রাজ্যকে ভাবতে বলেন বিচারপতি। একইসঙ্গে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এও বলেন, আবেগ সব রাজনৈতিক দলের আছে। কতদিন ধরে সহ্য করতে হবে? বলেছি যে, রাস্তার এক তৃতীয়াংশ রাজনৈতিক দলেরা দখল করে নিয়েছে।বিচারপতি আরও বলেন, ‘সকাল ১১টার পর কলকাতায় এসব করতে বলুন।এরই প্রেক্ষিতে বিচারপতি বলেন, ‘ছুটি ঘোষণা করুনএকইসঙ্গে এও বলেন, ‘মানুষ কতদিন সহ্য করবেন?’ এরপই বিচারপতি বলেন, ‘একুশে জুলাই অফিস যেতে অসুবিধা হবে না এটা নিশ্চিত করা হোক।’এরই রেশ ধরে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এ দিন জানান, এই জায়গায় ভবিষ্যতে সভা হবে কি না, সেটা নিয়ে দীর্ঘ শুনানি করতে হবে। কারণ এই একটা জায়গায় নির্দিষ্ট একটা সংগঠন সুবিধা পাবে, সেই নিয়ে বিবাদ চলতে থাকবে, সেটা হবে না। আরও বলেন, ‘এ বার শুধু সময়ের কারণে এই জায়গা বদল করতে বলতে পারছি না। তবে আগামী বছর এই জায়গা বদল করে অন্য কোনও জায়গায় সভা করবে, সেই লিখিত মুচলেকা এ বার দিতে হবে।

এদিনের শুনানিতে আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা। রাজনৈতিক প্রভাবযুক্ত মামলা। কেউ ওই সভা বাতিলের কথা বলেনি।’  এজি কিশোর দত্ত প্রশ্ন করেন, ‘এই ধরণের মামলার কারণ কী?’ বিচারপতি বলেন, ‘ট্রাফিক একটা অন্যতম কারণ। মামলাকারী দেখিয়েছেন বিগত বছরে কীভাবে ট্রাফিকের পরিস্থিতি বদল হয়েছে।একইসঙ্গে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এও বলেন, ‘তিন দশক ধরে এখানে একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ চলছে। এই মামলা খারিজ করা হোক। এটা অভিসন্ধিমূলক মামলা। অ্যাটেনশন পাওয়ার জন্য এই মামলা করা হয়েছে।

এদিকে, ২১ জুলাই নিয়ে কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই কিছু বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। শুক্রবার সেই সব বিজ্ঞপ্তি আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সওয়াল করবে। এদিন বিচারপতি জানতে চান, পুলিশ এই সভা নিয়ে কী ব্যবস্থা করছে তা নিয়েও। আর এ ব্যাপারে শুক্রবার রিপোর্ট দিয়ে তা জানাতে হবে বলেও জানান বিচারপতি। সঙ্গে এও বলেন, ২১ জুলাই সকাল ১১টা পর্যন্ত শহরে কোনও গাড়ি চলাচল যেন স্তব্ধ না হয় তা দেখতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 2 =