বাংলাদেশি তকমা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে খোদ রাজধানী দিল্লি আর ওড়িশায়। বিশেষত ওড়িশার ঝাড়সুগুদায় আটকে রয়েছেন ২৩ জন পরিযায়ী শ্রমিক। যা নিয়ে সরব হতে দেখা গেছে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। ওড়িশার পর দিল্লিতেও বাংলার ছ’জন শ্রমিককে আটক করার অভিযোগ সামনে আসে। ১৮ জুন দিল্লির রোহিনী পুলিশ জেলার কে. এন কাটজু থানা এলাকায় ছ’জনকে আটক করা হয় বলে অভিযোগ। দিল্লি ও ওড়িশার পর গুজরাতেও বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিককে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, সুরতে কাজ করতে যাওয়া বোলপুরের সনসৎ গ্রামের বাসিন্দা শেখ মোজাম্মেল নামে ওই পরিযায়ী শ্রমিককে বিনা কারণে দীর্ঘক্ষণ আটকে রেখেছিল গুজরাত পুলিশ।
আর এই ইস্যুতেই বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের হয় বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে।এরপরই বৃহস্পতিবার বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আটকে রাখার অভিযোগে একাধিক প্রশ্নের উত্তর চাইল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন ডিভিশন বেঞ্চের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয়, ‘কেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আটকে রাখা হয়েছে সে ব্যাপারে। শুধু তাই নয়, ডিভিশন বেঞ্চ এও জানতে চায়, কিসের ভিত্তিতে আটক করা হয়েছে তা নিয়েও। একইসঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চের তরফ থেকে এ প্রশ্নও করা হয়, এই সব শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের হয়েছে কি না। পাশাপাশি এও জানতে চাওয়া হয়, আটক করার পরে ওই পরিযায়ীদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে বা এখন তাঁরা কোথায় রয়েছেন সে ব্যাপারেও। এই প্রশ্নগুলি রাজ্যের মুখ্যসচিব বা সেই পদমর্যাদার একজন আধিকারিক আদালতের এই প্রশ্নগুলি ওড়িশার মুখ্য সচিবকে পাঠানোর কথাও বলে আদালত। প্রশ্নের উত্তর দেখে আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
প্রসঙ্গত, ওড়িশার ঝাড়সুগুদা জেলায় কাজ করতে গিয়ে নদিয়ার ২৩ জন শ্রমিক পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন বলে অভিযোগ। অথচ, তাঁদের কাছে সমস্ত বৈধ পরিচয়পত্র থাকার পরেও এমন ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে মামলাটি। এই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী রাজ্যের কাছে জানতে চায়, রাজ্য ওড়িশা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছে কি না। উত্তরে রাজ্য জানায়, আদালত নোডাল অফিসার নিয়োগ করুক অথবা এডিজি ল অ্যান্ড অর্ডার বিষয়টি দেখবেন। রাজ্যের তরফে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এওবলেন, ‘আমরা জানতে পারছি, ওড়িশায় ২০০ জন বাঙালি আটকে আছেন। এটা খুব সিরিয়াস বিষয়।’
এরপরই এই নোডাল অফিসার হিসেবে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে একজন অফিসার আধিকারিককে নিয়োগেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে তিনি ওড়িশা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারেন।আদালত সূত্রে খবর, আগামী সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।