যাদবপুরের ঘটনার প্রতিবাদে গত সপ্তাহেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল মেদিনীপুর কলেজ। সেখানকার বাম ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাসের বাইরে বিক্ষোভ দেখানোর সময় ছাত্রীদের উপর পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে। দুই ছাত্রী সুচরিতা দাস, সুশ্রীতা সরেনকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে গিয়ে নিগ্রহেরও অভিযোগও ওঠে। এবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের মামলায় আইজি মুরলিধর শর্মায় আস্থা দেখাল হাইকোর্ট।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া হেনস্তা কাণ্ডে আইজি মুরলিধর শর্মার কাছেই রিপোর্ট তলব হাইকোর্টের। এই মামলায় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘আগে অনুসন্ধান হওয়া উচিত। তারপরে এফআইআর হবে কি না সেটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার।’ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তবে পুলিশের মরাল ভাঙা যাবে না, এদিনের শুনানিতে এমন পর্যবেক্ষণও দেখা গিয়েছে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের। পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ, এখন থেকে গোটা ঘটনার তদন্তে নেতৃত্বে দেবেন মুরলীধর শর্মা। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা-সহ পুলিশের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে রিপোর্টও দেবেন তিনি।
এদিকে মঙ্গলবার মেদিনীপুর কলেজের কাণ্ডে অভিযোগকারী ছাত্রী সুচরিতা দাসের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও সামিম আহমেদ জানান, ‘যাদবপুরের ঘটনার প্রতিবাদে মেদিনীপুর কলেজ ক্যাম্পাসে ভিতরে আন্দোলন চলছিল। সেখান থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। মাঝরাতে গ্রেফতার না দেখিয়ে ছেড়ে দেয়। তার আগে পুলিশ কাস্টডিতে বেধড়ক মারধর করা হয়। অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। হুমকি দেওয়া হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হোক। কলেজের মধ্যে ভিডিও ফুটেজও রয়েছে।’
আইনজীবীর বক্তব্য শুনে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বক্তব্য, আগে অনুসন্ধান হওয়া উচিত। তারপর এফআইআর হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। এদিকে এদিনের শুনানিতে অ্যাডভোকেট জেনারেল সওয়াল করেন, ‘যখন তরুণী থানায় আসেন, তখন তার সঙ্গে একাধিক আইনজীবী ছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজ আছে। তাকে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। দুপুরে থানার হেফাজতে ঘুমোয়। বিকেলে কোনও একটা সংগঠনের সঙ্গে চ্যাট করতে থাকে। মিথ্যে অভিযোগ করে পুলিশের নীতি ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি ঘোষ জানান, পুলিশের বক্তব্য নিয়ে আপত্তি থাকলে হলফনামা দিতে হবে। থানার ওসিকে হলফনামা দিতে হবে। এরপর তিনি আইজি (প্রশিক্ষণ), মুরলীধর শর্মাকে তদন্তে নেতৃত্ব দেওয়ার নির্দেশ জারি করেন। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা-সহ তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবেন। ২৬ মার্চ পরবর্তী শুনানি।
ঘটনায় আদালতের নির্দেশঃ
*আবেদনকারীর বক্তব্য নিয়ে আপত্তি থাকায় পুলিশকে হলফনামা দিতে হবে।
*থানার ওসিকে হলফনামা দিতে হবে।
*আইজি মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে অনুসন্ধান করতে হবে।
*সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা-সহ তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে অনুসন্ধান করবেন।
*কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ করতে হবে আইপিএস মুরলীধর শর্মাকে।
*২৬ মার্চ পরবর্তী শুনানি