পার্থ রায়
লোকসভা ভোটের মাঝে বিজেপির নির্বাচনী বিজ্ঞাপনে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। গত ৪, ৫, ১০ ও ১২ মে বিভিন্ন সংবাদপত্রে বিজেপি যে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল, সেই জাতীয় কোনও বিজ্ঞাপন আর প্রকাশ করতে পারবে না বিজেপি। সেগুলি পরীক্ষিত নয় বলেও উল্লেখ করে এমনই নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। বিজেপির নির্বাচনী বিজ্ঞাপন নিয়ে তৃণমূলের তরফে উচ্চ আদালতে মামলা জানানো হয়েছিল। তা নিয়ে শুনানি হয় সোমবার। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যর এজলাসে মামলাটি ওঠে। তবে বিজেপির তরফে এদিন কোনও আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। বিজেপিকে মামলা সংক্রান্ত নথি দেওয়া হয়েছে। এই মর্মে কোন তথ্য আদালতে জমা দিতে পারেননি তৃণমূল কংগ্রেসের আইনজীবীরাও। তারপরও মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে বিচারপতি অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেন। তিনি জানান, যে কোনও ধরনের সংবাদমাধ্যমে এই বিজ্ঞাপন দিতে পারবে না বিজেপি, যা পরীক্ষিত নয়। আদালত জানিয়ে দেয় আগামী ৪ জুন পর্যন্ত বিজেপি এমন কোনও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে পারবে না যেখানে নির্বাচনী আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গ হয়। সংবাদ মাধ্যমগুলিকেও বিজ্ঞাপন নেওয়ার আগে প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার ১৯৯৬ সালের গাইড লাইন মানতে হবে সেই কথাও এদিন স্মরণ করিয়ে দেয় আদালত। পাশাপাশি তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, বিজ্ঞাপন নিয়ে তৃণমূল যে অভিযোগ করেছিল, তা নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সেটা করেনি।
উল্লেখ্য, এই বিজ্ঞাপন নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে এমন বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়েছে যা মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও তাদের দলের জন্য অবমাননাকর। সেখানে যে সমস্ত শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে তা নিয়েও আপত্তি তোলা হয় তৃণমূলের তরফে। এই বিজ্ঞাপনের প্রেক্ষিতে ২১ তারিখের মধ্যে বিজেপির থেকে জবাব তলব করা হয়েছিল। কমিশন জানিয়েছিল, যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সুকান্ত মজুমদার জবাব না দেন তাহলে ধরে নেওয়া হবে বিজেপির রাজ্য সভাপতির কোনও বক্তব্য এই নিয়ে নেই। সেই মোতাবেক পদক্ষেপ করবে কমিশন।
এদিকে ইতিমধ্যেই এই বিজ্ঞাপন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল। এবার সেই মামলার প্রেক্ষিতে উল্লেখযোগ্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে। বিজেপিকে বিতর্কিত বিজ্ঞাপন প্রকাশের ক্ষেত্রে ‘ইনজাংশন’ দেওয়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। পাশাপাশি আদালতের যে সার্বিক পর্যবেক্ষণ তাও গেরুয়া শিবিরের জন্য বিশেষ হিতের নয়, এমনটাই মনে করছে আইনজীবী মহল।