বঙ্গে একাধিক মামলার তদন্ত করছে সিবিআই এবং ইডি এই দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এদের এই তদন্তের আওতার মধ্যে রয়েছে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা, পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলা, গোরু পাচার মামলা, রেশন দুর্নীতি মামলার মতো একাধিক ‘হাইপ্রোফাইল কেস’। কিন্তু, বঙ্গে কত মামলা রয়েছে CBI-এর এবার এই প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টে খতিয়ান দেওয়া হল সিবিআইয়ের তরফ থেকেই।
বৃহস্পতিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন সংক্রান্ত মামলাটি ওঠে কলকাতা হাইকোর্টে। সেখানেই সিবিআই-এর উদ্দেশ্যে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা এখানে স্থায়ী বাড়ি কেন নিচ্ছেন না কেন? নেওয়া উচিত। আপনাদের হাতে তো হাজারের উপর মামলা রয়েছে, নাকি?’ এরপরই পালটা সিবিআই-এর তরফের আইনজীবী জানান, ‘৫০০-র বেশি মামলা রয়েছে।’ তবে এই পরিসংখ্যান মৌখিক।
এদিকে গত তিন বছরে একাধিকবার বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ‘এজেন্সি রাজনীতি’ নিয়ে সরব হয়েছে। এমনকী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এই প্রসঙ্গে চিঠি লিখেছিলেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির নেতারা। এরপর ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডল। অনুব্রতর এই গ্রেফতারিতেই ফুঁসে উঠতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যের শাসক দলকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কেষ্টর গ্রেফতারিতে ‘এজেন্সি রাজনীতি’-র অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্য শাসক দলের নেতারা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও। জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেফতারি নিয়েও সুর চড়াতে দেখা গেছে খোদ তৃণমূল সুপ্রিমোকেই। তবে বিজেপি-নেতাদের স্পষ্ট দাবি ছিল, এজেন্সি স্বতন্ত্রভাবে কাজ করে। এক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর প্রশ্নই ওঠে না।
লোকসভা নির্বাচন যখন দোরগোড়ায় সেই সময় সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি কোমর বেঁধে সংগঠনের জোর বাড়াতে ময়দানে নেমেছে। আর এরই সূত্র ধরে তৃণমূল নেতাদের এক বিরাট অংশের আস্ফালন, ‘ইডি-সিবিআই-কে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে।’ যদিও এই অভিযোগ মানতে নারাজ গেরুয়া শিবির।
উল্লেখ্য, এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জমি সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতির মন্তব্য, নিম্ন আদালতে কবে থেকে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে বা কবে শেষ হবে তা হলফনামা দিয়ে জানান।পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বিচারপতি এদিন এ প্রশ্নও করেন, সিবিআই তাঁর বিরুদ্ধে কি অভিযোগ আনছে তা নিয়েও। সঙ্গে এও মনে করিয়ে দেন, তিনি মন্ত্রী ছিলেন। আর সেই কারণে সরাসরি নিয়োগ করতেন বলে অভিযোগ আনা হচ্ছে। সঙ্গে এ প্রশ্নও রাখা হয় যে, প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ করা হত কি না তা নিয়েও। এরপরই সম্পূর্ণ অভিযোগ খতিয়ে দেখে জানানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি। এদিকে আদালত সূত্রে খবর, আগামী ২৩ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি হতে চলেছে।