বাংলা ভাষা বিতর্ক উস্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এবার বিদ্ধ করল তৃণমূল। শুক্রবার দুর্গাপুরে সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে ৫ হাজার ৪০০ কোটির প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। পাশাপাশি একটি জনসভাও করেন। আর এই জনসভা থেকেই তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ শানান।
এরপরই পাল্টা তৃণমূলের তরফ থেকে মোদিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘আপনি বাংলায় আপনার বক্তৃতা শুরু করেছেন। আমাদের চিন্তা হচ্ছে আপনাকেও না আটক করে নেওয়া হয়।’শুধু তাই নয়, এদিন কুণাল প্রধানমন্ত্রীকে খোঁচা দিয়ে এও বলেন, ‘দৃশ্যমান বকেয়া দিচ্ছেন না, অদৃশ্য ৫ হাজার কোটি দেখিয়ে গেলেন।’
সম্প্রতি, ভিন রাজ্য থেকে অনেক বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করার খবর এসেছে। তাদের কাছে যথাযথ প্রমাণপত্র না থাকার কারণ দর্শানো হয়। পাল্টা তৃণমূল দাবি করে, বাংলা ভাষায় কথা বললেই বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরই সঙ্গে চর্চায় আসে ‘পুশব্যাক‘ ইস্যু। আর বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালিদের হেনস্থার অভিযোগে বুধবার কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিল করতে দেখা গেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যেখান থেকে মমতা বলেন, ‘ভারত সরকার একটি নোটিফিকেশন দিয়েছে। সেটি আমরা চ্যালেঞ্জ করব। লুকিয়ে লুকিয়ে নোটিফিকেশন যেখানে বিজেপি আছে সেখানে পাঠিয়েছে। সেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছে, যাকেই সন্দেহ হবে, বাংলায় কথা বলে, তাঁকে অ্যারেস্ট করবে, ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে। কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলেও। এটা তো ভয়ংকর। অবৈধভাবে আইন করছেন।’
এদিকে ভাজা খাবার নিয়ে যে ফরমান জারি করা হয়েছে, সেই ফরমানকে উড়িয়ে দিয়ে কুণাল এদিন জানান, গণতান্ত্রিক দেশে জনগণ সিঙাড়া খাবে, ফিস ফ্রাই খাবে, জিলিপিও খাবে। খাদ্যের গুণমান যদি ঠিক থাকে সেখানে কোনও ফতোয়া মানা হবে না। একইসঙ্গে দুর্গাপুরে মোদির বিরুদ্ধে ‘মিথ্যাচার’-এর অভিযোগ তুললেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রক সমস্ত কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন একটি ফরমান জারি করে। সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী জিলিপি–সিঙাড়ার মতো খাবার খাওয়ার বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ছাত্রছাত্রী–শিক্ষক–শিক্ষিকা এবং অভিভাবকদের সতর্ক করতে বলা হয়েছে। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে ফিস ফ্রাই, সিঙাড়া, জিলিপি সাজানো প্লেটে নিয়ে বসেন কুণাল ঘোষ, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যেরা। আর এই সাংবাদিক বৈঠক থেকেই কুণাল দাবি করেন, ‘কে কী খাবে তা ঠিক করে দিতে পারে না কেউ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য মনে করে শিঙাড়া, ফিস ফ্রাই, জিলিপির মতো খাদ্যের গুণগত মান যদি ঠিক থাকে তবে খেতে আপত্তি কোথায়? বহু জায়গায় মাছ–মাংস–ডিম খেতে দিচ্ছে না। কেউ কেউ নিরামিষ খান, কেউ আমিষ। গণতান্ত্রিক দেশে কে কী খাবে তা তার নিজস্ব। খাদ্য তালিকায় ফিস ফ্রাই থাকবে, শিঙাড়া থাকবে, জিলিপি থাকবে। খাদ্যে বিধিনিষেধ আমরা মানব না। মাছ–মিষ্টি অ্যান্ড মোর বাংলায় ছিল, আছে, থাকবে এবং চলবে। আমরা কোনওভাবেই এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের পক্ষে নই।’