আমি টাকা তোলার মাস্টার চাই না জনসেবক চাইছিঃ মমতা

‘আমি টাকা তোলার মাস্টার চাইছি না। আমি জনসেবক চাইছি। আগামী দিন তাঁরাই টিকিট পাবেন’, সোমবার নবান্ন থেকে এমনই বার্তা দিতে শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে। সঙ্গে এও বলেন, ‘বাংলার আইডেন্টিটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, কেন বুঝতে পারছেন না? আপনার টাকা খাওয়ার জন্য, আপনাদের টাকা খাওয়ার জন্য।’ এতদিন এসবর অভিযোগ শোনা যেত বিরোধীদের গলায়। আর এবার মুখ্যমন্ত্রীও প্রশ্ন তুলে দিলেন ‘টাকা তোলার’ অভিযোগ নিয়ে। সোমবার নবান্নের বৈঠকে মমতা এ প্রশ্নও তোলেন, ‘যদি দেখি কোথাও জবরদখল হচ্ছে, যখন হচ্ছে, তখন কেন অ্যাকশন নেওয়া হচ্ছে না? কেউ টাকা খেয়ে, কেউ টাকা খাইয়ে এবং একটা মাল্টিপল ইন্টারেস্ট গ্রুপ এগুলো করছে, টাকার বিনিময়ে।’ এলাকা ধরে ধরে এদিনের বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। কখনও হাওড়া, কখনও সল্টলেক, যেখানে যেখানে গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে, কাউকে রেয়াত করলেন না মুখ্যমন্ত্রী।

বৈঠকে মমতার প্রশ্ন, ‘হাওড়ার এসডিও অমৃতা রায়বর্মণ কী করছেন? ইচ্ছে মতো টেন্ডার করছেন, নিজেরা তার থেকে কতটা খাচ্ছেন, আমি জানি না। কেউ খাচ্ছেন, কেউ খাচ্ছেন না, নিশ্চয়ই দিয়ে-টিয়ে খাচ্ছেন।’ টাকার বিনিময়ে পুরসভার বহু জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে, এমন অভিযোগও উঠে আসে সোমবারে নবান্নের বৈঠকে। বিরক্ত হয়ে মমতাকে বলতে শোনা যায়, ‘কারও কারও অভ্যাস হয়ে গেছে, আইসি হলে যতটা পারি ইনকাম করে নিই। এসডিও হলে একটা সঞ্চয় করে নিই। ডিএম যে ক’দিন থাকব, সঞ্চয় করে নিই। দেশে পাঠিয়ে দিই। আর করবেন না প্লিজ। এবার কিন্তু বড্ড চোখে লাগছে।’

শুধু তাই নয় সল্টলেকে ফুটপাথ দফলের অভিযোগও এদিন উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে। একরাশ বিরক্তি নিয়ে মমতা বলেন, ‘আমার লজ্জা লাগছে। এআরডি অফিসের সামনে একটা করে ত্রিপল লাগাচ্ছে, বসে যাচ্ছে। আমি জানতে চাই, কত টাকার বিনিময়ে, কারা নিয়েছে টাকা? পার্কিংয়ের নামে অনেক জায়গায় বেআইনি ভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখে, তোলাবাজি করে। পুলিশের থ্রু-তে বিজেপির কাছে টাকা যায়। আমাদেরও কিছু কিছু লোক আছে। তারাও যাতে ইডি, সিবিআই না ধরে… বিজেপি তো ভয় দেখায়।’

কারখানার গেটে যাতে কোনওভাবেই চাঁদা তোলা না হয়, দলীয় বিধায়কদের সেই বার্তাও এদিন দিতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে। স্পষ্ট ভাষায় জানালেন, শিল্পকে কোনওভাবে ‘ডিস্টার্ব’ করা চলবে না। মমতা বলেন, ‘আমরা কিন্তু বাংলার কোনও ইন্ডাস্ট্রিকে ডিসটার্ব করি না। কখনও পয়সা নিই না আমাদের পার্টি থেকে। পার্টি থেকে কমিশন খাওয়ার কথাও আমরা কখনও সাপোর্ট করি না। যারা এই টাকাগুলো নিচ্ছেন, তারা নিজের পকেটে ঢোকাচ্ছেন। এগুলো পার্টি পায় না, আমার দরকারও নেই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − two =