নিয়োগ দুর্নীতি প্রমাণিত হলে বাতিল করা হবে সম্পূর্ণ বা নিয়োগের অংশিবশেষ, জানাল আদালত

এসএসসি মামলায় এবার বড় পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের। আদালতের তরফ থেকে বুধবার জানানো হল, নিয়োগ দুর্নীতি প্রমাণিত হলে বাতিল করা হতে পারে সম্পূর্ণ নিয়োগ কিংবা গোটা নিয়োগের অংশ বিশেষ। সঙ্গে এও জানানো হয়, এই দু’টি বিকল্প পথই এখনও পর্যন্ত আদালতের কাছে রয়েছে বলে বুধবার প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে জানান হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক। একইসঙ্গে বিচারপতি এও বলেন, ‘যদিও এটি একেবারে প্রাথমিক পর্যায় এবং এখনও অনেক কিছু খতিয়ে দেখবে আদালত।’ সঙ্গে বিচারপতির সংযোজন, যদি সবটা অবৈধ হয়, তবে পরিণতি যা হওয়ার তাই হবে। এরই রেশ ধরে এদিন বিচারপতিকে এপ্রশ্নও করতে দেখা যায়, কেউ পিছনের দরজা দিয়ে চাকরি পেলে তার সঙ্গে কি করা উচিত তা নিয়েওয

এদিকে আদালত সূত্রে খবর, এদিন আদালতে ফের কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকরা। সেই সময়েই বিচারপতির মন্তব্য, ‘কমিশনকে বিশ্বাস করতে না পারলে তো গোটা নিয়োগ বাতিল করা উচিত। তাহলে গোটা প্রক্রিয়াটাই তো অস্বচ্ছ। একটা পচা আপেল গোটা ঝুড়ির আপেলকে নষ্ট করে দেয়।’ সেই পচা আপেল খুঁজে বের করার জন্য আদালতে সওয়াল করেন বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকরা। আর এই প্রসঙ্গেই বিচারপতির প্রশ্ন, এটা আদৌ করা সম্ভব  কি না তা নিয়েই। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি এও বলেন, ২৩ লাখ চাকরিপ্রার্থী কী দোষ করেছিলেন? তাঁরা শুধু চেয়েছিলেন যে নিয়োগ প্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়।

উল্লেখ্য, এদিন আদালতে বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের পক্ষের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন, এসএসসির তরফে আদালতের সামনে সব কথা বলা হচ্ছে না। তাঁর দাবি, কমিশনের কারা কারা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, সেটা প্রকাশ্যে আনা হোক। বিশেষ করে ওএমআর শিটের মূল্যায়ন ও ওএমআর স্ক্যান করার বরাত কাকে কীভাবে দেওয়া হয়েছিল সেটা যাতে স্পষ্ট জানানো হয়, সেই দাবিও তোলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘টেন্ডার দেওয়ার প্রক্রিয়া কমিশনের দফতরেই হয়েছিল। এখন কমিশন বলছে যে তারা সিবিআই-এর রিপোর্টে নাম থাকা ডেটা স্ক্যান টেক সংস্থার নাম জানে না। আর এখানেই আইনজীবী জয়ন্ত মিত্রের প্রশ্ন এটা সম্ভব  কি না তা নিয়েই। সঙ্গে আইনজীবী এ প্রশ্নও তোলন,  এই কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও। সে কথা শুনেই বিচারপতি বলেন, ‘যদি কমিশনকে বিশ্বাস না করা যায় তাহলে তো গোটা নিয়োগপ্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়া উচিত।’ একইসঙ্গে বিচারপতি এও মন্তব্য করেন, ‘এখন বিতর্কিত চাকরিপ্রাপক এবং তাদের পরিবারের ১০ হাজার লোকের কথা বলা হচ্ছে। যে ২৩ লাখ চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তাঁদের কথাও ভাবতে হবে তো। তাঁরা কি চেয়েছিলেন? তাঁরা শুধু চেয়েছিলেন যে গোটা প্রক্রিয়াটা যেন স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 17 =